মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইসরাইলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের অবস্থান লক্ষ্য করে অন্তত ১২টি বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। হামলায় প্রাণে রক্ষা পেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামাস নেতাদের অবস্থান করা হোটেল, যেখানে গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে আলোচনা চলছিল। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিলেন হামাসের শীর্ষ নেতা খলিল আল হাইয়া, জাহের জাবারিনসহ আরও কয়েকজন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, কাতারের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে। কাতারের প্রতিক্রিয়া কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ আক্রমণ বলে উল্লেখ করে বলেছে, “আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব লক্ষ্য করে কোনো কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।” আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে কাতারের ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রকাশ্য লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার প্রশংসা করে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। ইরান, ইয়েমেন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইরাক, তুরস্ক, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালদ্বীপ এবং আরব লীগ—সবাই এই হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্ব ধর্মীয় নেতৃত্বের উদ্বেগ ভ্যাটিক্যানের পোপ লিও চতুর্দশও হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর এবং এর ফলে আঞ্চলিক অস্থিরতার ঝুঁকি আরও বাড়বে।” এই হামলার পর কূটনৈতিক উত্তেজনা যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইন ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান আদৌ বজায় রাখা হচ্ছে কি না। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর এখন কাতার ও মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির দিকে।