তুরস্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে দমন–পীড়নের অভিযোগকে ঘিরে। গতকাল রবিবার রাজধানী আঙ্কারার তানদোগান স্কয়ারে বিশাল সমাবেশ করেছে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)। সেখানে লাখো সমর্থক যোগ দিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবিতে সরব হন। সমাবেশের লাইভ ফুটেজে দেখা গেছে, জনতা তুরস্কের জাতীয় পতাকা ও দলীয় ব্যানার উড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলছেন। বিরোধী নেতারা দাবি করেন, গত কয়েক মাস ধরে পরিকল্পিতভাবে সিএইচপি–র নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছেন ইস্তাম্বুলের মেয়র এবং এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলুও। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, এসব গ্রেফতার আসলে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পথ পরিষ্কার করতে সরকারের ষড়যন্ত্র। আন্দোলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সিএইচপির নেতা ওজগুর ওজেল বলেন, “এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের নেতারা নির্দোষ।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, জনগণের সমর্থন কমতে থাকায় সরকার বিরোধী কণ্ঠরোধের পথ বেছে নিয়েছে। অন্যদিকে এরদোয়ান সরকার এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, তুরস্কের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন এবং সরকার আইন মেনে চলছে। এদিকে, দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনে নতুন অনিশ্চয়তা যোগ করেছে সিএইচপির কংগ্রেসকে ঘিরে মামলা। ২০২৩ সালে দায়ের হওয়া সেই মামলার রায় আজ ঘোষণা হওয়ার কথা। রায়ে কংগ্রেস বাতিল হলে বিরোধী দলের নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি সিএইচপিকে অভ্যন্তরীণ সংকটে ফেলতে পারে, যা সরকারের জন্য রাজনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে। তুরস্কের রাজনীতি বর্তমানে একদিকে বিরোধী আন্দোলনের ঝড়, অন্যদিকে বিচারিক রায়ের অনিশ্চয়তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। পরিস্থিতি কোন পথে মোড় নেবে, সেটিই এখন দেশের জনগণের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।