কৃষি কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়তে থাকায় সনাতনী পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন হারভেস্টার ও ড্রোন ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে। বিশেষ করে ড্রোনের মাধ্যমে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ কৃষকদের জন্য সময় ও খরচ দুই দিকেই অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এক বিঘা জমিতে কীটনাশক ছিটাতে যেখানে সাধারণভাবে দুই ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে ড্রোন ব্যবহার করলে মাত্র ৩ থেকে ৫ মিনিটেই কাজ শেষ হয়। এতে কৃষকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে এবং সার-কীটনাশকের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ফলে পরিবেশেরও উন্নতি হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কারিগরি সহায়তায় ‘জিনিয়াস ফার্মস লিমিটেড’ ও ‘ফ্লাইমেক’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান মাঠপর্যায়ে ড্রোন সেবা দিচ্ছে। নরসিংদী ও মানিকগঞ্জের পাশাপাশি সাভারের বিরুলিয়াতে কৃষকেরা ইতোমধ্যে এই আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করছেন। ড্রোন পরিচালনার মাধ্যমে প্রতি বিঘায় খরচ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, যা প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অর্ধেক বা তার কম। ড্রোন ব্যবহারে কীটনাশকের সঠিক পরিমাণ ছিটানো সম্ভব হওয়ায় কৃষক ও পরিবেশ উভয়ের জন্যই এটি লাভজনক। প্রতিষ্ঠানগুলো ভবিষ্যতে গ্রামীণ কৃষক সমিতির মাধ্যমে ড্রোন সেবাকে একটি ব্যবসায়িক মডেলে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে একটি ড্রোন মাসে দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে। দেশীয়ভাবে তৈরি ড্রোনের দাম তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত, যা ক্রেতারা অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে সহজে ক্রয় করতে পারছেন। আগামী বছর থেকে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিক ব্যাপ্তি লাভ করবে এবং ড্রোনের ক্ষমতাও বাড়ানো হবে। যদিও দেশের ছোট ছোট কৃষিজমির কারণে এককভাবে ড্রোন চালানো কিছুটা কঠিন, তাই একাধিক কৃষকের মিলিত চাহিদায় এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। কৃষিতে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে কাজ করা জিনিয়াস ফার্মস ‘ডাক্তার চাষি’ নামের একটি ফ্রি অ্যাপের মাধ্যমে ৪১টি প্রধান ফসলের রোগ ও কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের সুবিধাও দিচ্ছে। অন্যদিকে, ‘ড্রোন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠানটি অস্ট্রেলিয়ান ড্রোন আমদানি করে বাজারজাত করছে, যার মাধ্যমে বড় ধরনের কীটনাশক বহনের সক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন দেশের কৃষিক্ষেত্রে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সবমিলিয়ে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে সময়, শ্রম ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আধুনিকায়নের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই প্রযুক্তি যদি সফলভাবে বিস্তৃত হয়, তবে কৃষি উৎপা