ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা লাভ করেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একটি হামলার পর থেকে দিল্লি পাল্টা আঘাতের আতঙ্কে ভুগছে। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, ভারত সরকার ২১টি বিমানবন্দর আগামী ১০ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফলে গত বুধবার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দাবি করেছেন, পাকিস্তানে সামরিক হামলায় শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তান যদি পাল্টা হামলা চালায়, তবে ভারত আরও জোরালোভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে। এদিন ভারত লাহোরের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম উড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে, যদিও হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই যুদ্ধাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল যে, কাশ্মীর বিরোধের কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ১২.৫ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। গবেষকরা সতর্ক করেছিলেন যে, এই যুদ্ধের ফলে জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা আরও কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতি সেই গবেষণার পূর্বাভাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন, কাশ্মীর ইস্যু এবং সীমান্ত সংঘর্ষের কারণে আরও গভীর হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রশ্ন উঠছে—ভারত ও পাকিস্তান কি সত্যিই পরমাণু যুদ্ধে জড়াবে? যদিও এ বিষয়ে কোনো দায়িত্বশীল পক্ষের মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতি যে অত্যন্ত উদ্বেগজনক, তা স্পষ্ট। এখন বিশ্ববাসীর নজর এই দুই দেশের দিকে, কারণ তাদের মধ্যে সংঘাতের পরিণতি কেবল তাদের জন্য নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে।