ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৬৭টি টেস্ট ম্যাচ খেলে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আইপিএলের মাঝেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানান। রোহিত এখন থেকে শুধুমাত্র এক দিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ক্রিকেটে খেলবেন। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এবার টেস্ট ফরম্যাট থেকেও সরে দাঁড়ালেন। ইনস্টাগ্রামে চার লাইনের একটি পোস্টে রোহিত লেখেন, “সবাইকে জানাতে চাই যে আমি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। সাদা পোশাকে দেশের হয়ে খেলা আমার কাছে গর্বের। এত বছর ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ। আমি এক দিনের ক্রিকেটে দেশের প্রতিনিধিত্ব চালিয়ে যাব।” গত এক বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটে রোহিতের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে রান করতে ব্যর্থ হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজেও তাঁর ব্যাট ছিল নিস্তব্ধ। এমনকি সিডনিতে শেষ টেস্টে তাঁকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখা হয়, যা তাঁর অবসরের গুঞ্জনকে আরও জোরালো করে। এদিকে, ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে রোহিতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের খবরও শোনা যাচ্ছিল। যদিও গম্ভীর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “যাঁদের ইউটিউব চ্যানেল আছে, তাঁরা নিজেদের বিশেষজ্ঞ মনে করে যা খুশি বলছেন। আমরা দু’মাস আগেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছি। রোহিতের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আগেও ছিল, এখনও আছে।” গম্ভীরের এই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রোহিতের অবসরের ঘোষণা আসে। আইপিএল শেষ হওয়ার পর ভারতের ইংল্যান্ড সফর শুরু হবে, যেখানে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ দিয়ে নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচনা করবে ভারত। সিরিজ শুরুর আগে রোহিতকে টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু তিনি নিজেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটালেন। রোহিতের অনুপস্থিতিতে ভারতের পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে জসপ্রিত বুমরাহ, ঋষভ পন্ত এবং শুভমন গিলের নাম আলোচনায় রয়েছে। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিতের পরিসংখ্যান দুর্দান্ত হলেও টেস্টে তাঁর সাফল্য ছিল তুলনামূলক কম। ৬৭টি টেস্ট ম্যাচে তিনি ৪৩০১ রান করেছেন, যার ব্যাটিং গড় ৪০.৫৭। তাঁর রয়েছে ১২টি শতরান ও ১৮টি অর্ধশতরান, সর্বোচ্চ রান ২১২। রোহিতের অধিকাংশ টেস্ট রান এসেছে দেশের মাটিতে, কিন্তু ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিদেশের মাটিতে তিনি ব্যাট হাতে ভুগেছেন। অনেকের মতে, ইংল্যান্ড সফরে ব্যর্থ হলে তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত। তবে তার আগেই তিনি নিজে থেকেই সরে দাঁড়ালেন, নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করে।