শুক্রবার জুমার নামাজ… সবাই আঁটোসাঁটো হয়ে বসেছেন ইমাম নাঈম মোহাম্মদ বেঈগের খুতবা শোনার জন্য। ধূসর রঙের স্যুট এবং সাদা শার্ট পরা ইমাম নাঈম উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে খুবই সাধারণ একটি বার্তা দেন, “আমরা কমালা হ্যারিস বা ট্রাম্প কাউকেই সমর্থন দেইনি। কিন্তু আপনাদের ভোট দিতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে শেষ শুক্রবার ভার্জিনিয়ার দার আল হিজরাহ ইসলামিক কেন্দ্রে জুমার নামাজের উপস্থিত হন মুসল্লিরা। এই শুক্রবারটিতে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। তিনি বার্তা দিয়েছেন মুসলিমরা যেন ট্রাম্প এবং কমালা কাউকেই ভোট না দেন।
আমেরিকান মুসল্লিদের অভিজ্ঞরা সতর্কতা দিয়ে বলেছেন যদি তারা ট্রাম্পকে ভোট দেন তাহলে এটি ‘নিজের সঙ্গেই নাশকতা’ করা হবে। মুসল্লিদের ‘বিবেক’ দিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের গাজার অবস্থান নিয়ে কমালা হ্যারিসকেও ভোট না দিতে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের মূলত এই দুজনের কাউকেই ভোট না দেওয়া এবং স্বাধীন থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের গাজা ও লেবাননে বর্বরতা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এতে সহায়তা করছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রই। এই বিষয়টি নিয়ে মোটেও খুশি নন দেশটির মুসলিম নাগরিকরা। বিশেষ করে যাদের পূর্বপুরুষরা মধ্যপ্রাচ্যের ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাউকে ভোট না দিলেও— বিভিন্ন সময় হতে যাওয়া ৫ লাখের বেশি স্থানীয় নির্বাচনে মুসলিমদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইমাম নাঈম মোহাম্মদ বেঈগ। তিনি বলেন, “চলুন চিন্তা শুরু করা যাক, কীভাবে স্থানীয়ভাবে আমি একটি পরিবর্তন আনতে পারি।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি রাজ্য, শহর, টাউন, কাউন্টি, স্কুল বোর্ড এবং বিশেষ বিভাগে ৫ লাখের বেশি স্থানীয় নির্বাচন হবে।
ইমাম নাঈম বেঈগ বলেন, “বিভিন্ন সময় আমেরিকায় ৫ লাখের বেশি নির্বাচন হবে। আমার ভাই ও বোনেরা, বড় পর্যায়ে বড় পরিবর্তন আনার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত অর্থ ও জনবল এখন নেই। কিন্তু আমাদের ছোট থেকে শুরু করতে হবে।”
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমালা হ্যারিসকে আমেরিকান মুসলিমরা পছন্দ করছেন না গাজা ও লেবাননে ইসরায়েরের গণহত্যার জন্য। অপরদিকে ট্রাম্পকে তারা পছন্দ করছেন না পূর্বের অবস্থানের জন্য। ২০১৭ সালে ছয়টি মুসলিম দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প। তিনি আদেশ দেন এই ছয়টি দেশের কেউ যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারবেন না।
জামাল নামের এক উবার চালক বার্তাসংস্থা টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেছেন, “এবার আমি ভোট দেব না।” ইথিওপিয়ান বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে শাস্তি দিতে গত নির্বাচনে জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার কার্যক্রমেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।
এদিকে ধারণা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা এবার ট্রাম্প এবং কমালা কাউকেই ভোট নাও দিতে পারেন।