গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস গাজার ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে নেশাজাতীয় মাদক মেশানোর গুরুতর অভিযোগ তুলেছে। শুক্রবার (২৭ জুন) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বিতরণ করা আটার ব্যাগে আসক্তি সৃষ্টিকারী মাদক মিশিয়ে দিচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “এই অপরাধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি সমাজকে ভেতর থেকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।” গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস পুরো ঘটনার জন্য ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীকে দায়ী করেছে। অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের ফার্মাসিস্ট ও লেখক ওমর হামাদ বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে উল্লেখ করেন, “খবরে জানা যাচ্ছে, ইসরায়েল আটার ব্যাগের ভেতর মাদক জাতীয় অক্সিকোডন লুকিয়ে গাজায় প্রবেশ করাচ্ছে। এমনকি সরাসরি আটাতেও মাদক মেশানো হচ্ছে।” এ বিষয়ে গাজার মাদকবিরোধী কমিটি জনগণকে সতর্ক করে বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্রের খাদ্যপণ্য ভালো করে পরীক্ষা করুন এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানান।” এদিকে, জাতিসংঘ চলতি সপ্তাহে গাজায় ‘খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের’ জন্য ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ৪১০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও তিন হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। এক লিখিত বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছে, “গাজার মানুষ এখনো একটি অমানবিক দ্বিধার মুখে—হয় অনাহারে মৃত্যু, নয়তো খাদ্য নিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারানোর ঝুঁকি।” ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (GHF) চলতি বছরের ২৬ মে থেকে গাজায় খাদ্য বিতরণ শুরু করে। তার আগে দুই মাসেরও বেশি সময় গাজায় সব ধরনের খাদ্য ও রসদের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল, যা আন্তর্জাতিকভাবে ‘গণদুর্ভিক্ষের হুমকি’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জাতিসংঘ মে মাসে জানায়, “গাজার শতভাগ মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষের সরাসরি ঝুঁকিতে রয়েছে।” এই পরিস্থিতি গাজার জনগণের জন্য একটি অমানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।