যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগের পর ভারতীয় ধনকুবের ব্যবসায়ী গৌতম আদানির কোম্পানিগুলো চলতি সপ্তাহেই ৫৫ বিলিয়ন ডলার বাজার মূলধন হারিয়েছে। গত সপ্তাহে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠে ভারতীয় শিল্পপতি আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের কয়েকজন নির্বাহীর বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনার পর বড় ধরনের সংকটে পড়ে আদানি গ্রুপ।
মার্কিন কৌঁসুলিদের অভিযোগ, আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি, তার ভাইপো সাগর আদানি এবং আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর– ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও আদানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পেতে গৌতম আদানি ও সাগর আদানিসহ মামলার সাত অভিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিতে সম্মত হয়েছিলেন, যে প্রকল্প থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার মুনাফা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ঘুষের বিনিময়ে তাদের ভারতের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজও দিতে চাওয়া হয়েছিল।
অবশ্য, এসব অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে এসেছে শিল্পগোষ্ঠীটি। বুধবার এক বিবৃতিতে (২৭ নভেম্বর) আদানি গ্রুপ জানায়, ‘মার্কিন বিচার বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) অভিযোগের পর থেকে আদানি গ্রুপের ১১টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির বাজারমূল্যে প্রায় ৫৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।’ আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়ে দিলেও গত সপ্তাহে মুম্বাইয়ের শেয়ারবাজারে আদানি গ্রুপের শেয়ারের ব্যাপক পতন ঘটে। একাধিকবার লেনদেন স্থগিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
বিবৃতিতে আদানি জানায়, তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ জালিয়াতি, ওয়্যার ফ্রড ষড়যন্ত্র এবং সিকিউরিটিজ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে। এতে আরও বলা হয়, গৌতম আদানি বা তার ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ বা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে- এমন বক্তব্য ‘অসত্য’। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি প্রতিবেদন আদানি গ্রুপকে ‘চরম কর্পোরেট জালিয়াতি’র অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল। এর ফলে তাদের বাজারমূল্য প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পায়।
সূত্র : এএফপি।