গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার পল্টন মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার সরদারপাড়া গ্রামে এতিমখানার উন্নয়ন উপলক্ষে আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাতে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। মাহফিলে বিএনপির এক নেতার নাম দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সেলিম আহমেদ আপত্তি জানান। তবে আয়োজকরা তা উপেক্ষা করায় গতকাল শুক্রবার রাতে এতিমখানার পক্ষের আবদুল আজিজের সঙ্গে বিএনপির সমর্থকদের কথা-কাটাকাটি হয়।
এ ঘটনার জের ধরে আজ শনিবার জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পাল্টা মিছিল বের করেন। পল্টন মোড় এলাকায় মিছিল দুটি মুখোমুখি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।
আহত ও ক্ষয়ক্ষতি
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ছয়জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান,
“হামলার ঘটনায় উভয় দলের অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিএনপি ও জামায়াতের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সাঘাটা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সেলিম আহমেদ বলেন,
“আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম। হঠাৎ তারা (জামায়াত) লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে, সাঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির ইব্রাহিম হোসাইন অভিযোগ করেন,
“শুক্রবার রাতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা আমাদের তিনজন কর্মীকে মারধর করেন। এর প্রতিবাদে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ মিছিল করছিলাম। সেই মিছিলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এতে আমাদের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।”
বর্তমান পরিস্থিতি
পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে যাতে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত না হয়।