বাংলাদেশের রাজনীতির এক প্রতীকী চরিত্র, বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় মৃত্যুবরণ করেছেন। দীর্ঘদিন নানা জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগে শেষ পর্যন্ত তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ শোকাহত। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুসলিম বিশ্বের নির্বাচিত দ্বিতীয় নারী সরকারপ্রধান হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৯৯১ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনদফায় তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সংসদীয় নির্বাচনে কখনো পরাজিত হননি। বিএনপির নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় দেশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানসহ বিরাট রাজনৈতিক সংগ্রাম তার জীবনের অংশ। একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও দৃঢ় নেতৃত্বের অধিকারী হিসেবে খালেদা জিয়া দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নানা রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মোকাবিলা করেছেন। দেশের তৎকালীন স্বৈরশাসক সরকারের পতনে তার নেতৃত্বমূলক ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতার কারণে দেশের এবং বিদেশের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। পরিবারের ঘনিষ্ঠ ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের উপস্থিতিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন স্তর থেকে শোক প্রকাশ এবং তার রূহের মাগফিরাত কামনা করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার জীবন ও কর্ম দেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তার অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশের দুই প্রধান দলের দুই শক্তিশালী নারী নেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আজকের এই শোকের দিনে, দেশের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব এবং সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করে তার জীবনী থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। তিনি একটি যুগান্তকারী নেত্রী ছিলেন, যার স্মৃতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অম্লান থাকবে।