দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে শঙ্কিত সিএফআর: ২০২৬ সালে ভারত-পাকিস্তান ও আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্লেষণধর্মী সংস্থা কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর) সাম্প্রতিক এক জরিপভিত্তিক প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার বৃদ্ধি ২০২৬ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পুনরায় সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে তা দুই পার্শ্বের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র করে সামরিক সংঘাতের পথ প্রশস্ত করতে পারে। এছাড়া, আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি হামলার পুনরায় বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকায়, ২০২৬ সালে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যেও মাঝারি মাত্রার সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সিএফআর’র এই মূল্যায়ন আসে এমন এক সময়ে, যখন গত বছর মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বল্প সময়ের সামরিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ পরিচালনা করে পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসী শিবির লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সশস্ত্র ড্রোন হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়াও সংঘর্ষের মাত্রা বাড়ায়। তবে উভয় পক্ষের সামরিক নেতৃত্ব অবশেষে সংঘাত কমানোর জন্য সমঝোতায় পৌঁছায়। এছাড়াও, প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে যে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যেও সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষত আফগানিস্তানে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) প্রধানকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান বিমান হামলার পর পরিস্থিতি তীব্র হয়। সিএফআর সতর্ক করেছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার এই ধরনের দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা ও সশস্ত্র সংঘাত শুধু সীমান্তীয় নয়, বরং পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনিশ্চিত ও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।