উত্তরাঞ্চলের চা–শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি চা–পাতা কিনবে বাংলাদেশ চা বোর্ড**
বাংলাদেশ চা বোর্ড আগামীতে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা চা–পাতা কিনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। আজ মঙ্গলবার পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘চা চোরাচালান রোধ ও উত্তরাঞ্চলের চা–শিল্পের উন্নয়ন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
সভায় তিনি জানান, উত্তরাঞ্চলের চা শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এবং চায়ের গুণগত মান বাড়াতে বোর্ডটি বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের ৫০ শতাংশ চা অকশনে (নিলাম) যায় না বলার মাধ্যমে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। “এই চা কোথায় যাচ্ছে?”—এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এই চা তো হেলিকপ্টারে করে যায় না। কিছু না কিছু ট্রাকে করেই চা পাঠানো হচ্ছে।”
তিনি চা চোরাচালানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানান, এর বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। “অনিয়ম পেলে চা কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে,” তিনি সতর্ক করেন।
শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, “প্রয়োজনে কয়েকটি ক্রয়কেন্দ্র খোলা হবে, যেখানে সরাসরি চাষির কাছ থেকে চা-পাতা কিনব।” কিন্তু তিনি চাষিদের কাছে একটি শর্ত রেখেছেন—“দ্রষ্টব্য হিসাবে নির্দিষ্ট সাইজের চা-পাতা সরবরাহ করতে হবে।” তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেও বাগানে গিয়ে নির্দিষ্ট সাইজের চা-পাতা কিনে আনব।”
তিনি পরিবহন এবং কুরিয়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন, “কাগজপত্র ছাড়া কোনো চা পাঠানো থেকে বিরত থাকুন।” চা বোর্ডের চেয়াম্যান বলেন, “সামান্য বেনিফিটের জন্য অনিয়ম করবেন না, এতে দেশের বড় ক্ষতি হবে।”
তিনি চা কারখানাগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “এখন থেকে যদি কোনো ফ্যাক্টরি অবৈধভাবে চা পরিবহন করে, তাহলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুনসী এবং অন্যান্য বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও চাষিরা উপস্থিত ছিলেন।
এই সভার মাধ্যমে বাংলাদেশ চা বোর্ড চা শিল্পের অনিয়ম দূর করার এবং চাষিদের সঙ্গে সার্বজনীন সম্পর্ক স্থাপনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা নিয়ে বিষয়টি আরও সচেতনতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।