মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনের করা একটি রিট আবেদনের শুনানির পর বাংলাদেশের হাইকোর্ট শনিবার গাছ কাটার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ বুধবার এই রায় প্রদান করে, যা দেশের পরিবেশ রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রায়ে, আদালত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তিনটি পৃথক কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এসব কমিটি গঠন করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে সাতদিনের মধ্যে পদ্ধতি নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। কমিটিগুলোতে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকরা অন্তর্ভুক্ত হবেন।
এছাড়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাত দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে। এই কমিটি জেলা পর্যায়ে গাছ কাটার অনুমতি দেবে। উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটার অনুমতির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী ও স্থানীয় প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে আলাদা কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
রায়ের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “এই পদক্ষেপ পরিবেশ রক্ষা এবং জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।” তিনি জানান, মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন এইচআরপিবি ২০২৪ সালে পরিবেশ সুরক্ষা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকাতে এ রিট আবেদনটি দায়ের করেছিল।
এই রায় দেশের পরিবেশ তথা জনস্বাস্থ্যের জন্য এক যুগান্তকারী উন্নতি এনে দিতে পারে, যা ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান, আর এ ক্ষেত্রে অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও সেলিম রেজা মনজিল মোরসেদের সহায়ক ছিলেন।
এখন দেখা হবে, আদালতের এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয় কিনা, এবং আগামীতে গাছ কাটার প্রক্রিয়া পরিবেশবান্ধব ও টেকসইভাবে পরিচালিত হয় কিনা।