মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ বা অনিবন্ধিত অভিবাসীদের কিউবার গুয়ানতানামো বে এলাকার একটি আটক কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে সরকার, যা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হতে পারে। এই তথ্যটি এসেছে মার্কিন সরকারের ‘সীমান্ত জার’ টম হোম্যানের মাধ্যমে, যিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন।
গত বুধবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো এই বিষয়ে ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আশা করি, ৩০ দিনের মধ্যে আমরা লোকজনকে সেখানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।” হোম্যান আরও উল্লেখ করেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে তিনি গুয়ানতানামো বে-তে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটি পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছেন, যেখানে নির্মাণাধীন আটক কেন্দ্রটি রয়েছে।
ট্রাম্পের মতে, ওই কেন্দ্রে প্রায় ৩০,০০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ধারণ করার সক্ষমতা রয়েছে। তবে হোম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী, শুরুতে অল্পসংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে সেখানে স্থানান্তরিত করা হতে পারে। গুয়ানতানামো বে-তে ইতিমধ্যেই একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্র বিদ্যমান, যা কয়েক দশক ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই কেন্দ্রটি মূলত সাগর থেকে আটক হওয়া হাইতি ও কিউবার নাগরিকদের রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগার থেকে আলাদা, যা সন্দেহভাজন বিদেশি ‘সন্ত্রাসীদের’ আটক রাখার জন্য নির্মিত।
২০ জানুয়ারি, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেব।” তিনি অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে থাকা লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।”
এছাড়া, ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনার কথাও জানান। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কোনো অভিবাসী যদি সন্তান প্রসব করে, তবে সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। সম্প্রতি তিনি এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশেও সই করেছেন।
এই পদক্ষেপগুলো মার্কিন অভিবাসন নীতির একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে, যা দেশটির অভিবাসন ব্যবস্থাকে নতুন করে রূপায়িত করার লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে।