ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে, এই আলোচনার বিস্তারিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি কিছুই উল্লেখ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওটি জয়শঙ্কর নিজেই তার ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন, যা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।
ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি মার্কো রুবিও, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া, কোয়াডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও তার উপস্থিতি ছিল।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে, এক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে ওয়ালজ ও রুবিওর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না। জয়শঙ্কর এর জবাবে বলেন, “হ্যাঁ, বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলাটা সমীচীন হবে না।”
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সুস্পষ্ট আগ্রহ রয়েছে দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে।” তিনি উল্লেখ করেন, নতুন প্রশাসন ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ভারতের উপস্থিতি চেয়েছিল এবং তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
এদিকে, মার্কো রুবিওর সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। নতুন মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের মাধ্যমে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রুবিও ও জয়শঙ্কর বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের গভীরতা, গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সহায়তা, জ্বালানি এবং একটি স্বাধীন ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতের সঙ্গে কাজ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাশাপাশি ‘অনিয়মিত অভিবাসন’ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন।
এই বৈঠক এবং আলোচনা, যা দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে, তা নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক রাজনীতির জটিলতাকে আরও গভীর করে তুলবে।