মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ আবু সাঈদ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের জন্য জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছে এনবিআরে প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ, আন্দোলনকারীদের অবস্থান প্রকাশ ইরানে যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ২৫০ বাংলাদেশির দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন: সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করলো ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) হজপালন শেষে দেশে ফিরলেন ৪০ হাজার ৫২০ জন হাজি

খুলে গেল মসজিদ, মাদ্রাসার দরজা ভারতে মহাকুম্ভে যাওয়া হিন্দুদের জন্য

bornomalanews
  • Update Time : সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ১৪৮ Time View

ভারতজুড়ে রাজনৈতিক মুসলিম বিদ্বেষের তীব্রতা যতই বৃদ্ধি পাক, সংকটের মুহূর্তে মানবতার হাত বাড়ানোর এক অনন্য উদাহরণ দেখা গেল উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে, যেখানে মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের জন্য মুসলিম সম্প্রদায় উন্মুক্ত করে দিলেন তাঁদের মসজিদ, মাদ্রাসা এবং ইমামবাড়ার দরজা। ২৯ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় বিপন্ন ও নিরন্ন পুণ্যার্থীদের জন্য এই মানবিক উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। অথচ, মহাকুম্ভ চলাকালীন শহরের বিভিন্ন এলাকায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখার জন্য অলিখিত নির্দেশনা জারি হয়েছিল।

এটি শুধু মসজিদ বা মাদ্রাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; স্থানীয় মুসলিমরা তাঁদের বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছিলেন ক্ষুধার্ত অসহায় পুণ্যার্থীদের জন্য। তাঁরা রান্না করেছিলেন নিরামিষ খাবার—পুরি, সবজি, খিচুড়ি, গরম চা, এবং শীতের জন্য কম্বলও বিতরণ করেছিলেন। পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পাশাপাশি, এই মানবিকতার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় মুসলিমদের মতে, এটি প্রয়াগরাজের সংস্কৃতি, যা ‘গঙ্গা–যামনি তেহজিব’ নামে পরিচিত।

রাজনৈতিক মুসলিম বিদ্বেষের সত্ত্বেও, এই মানবিকতা শুধু প্রয়াগরাজেই নয়, বরং অন্যান্য স্থানে ও দৃশ্যমান। সম্প্রতি কাশ্মীরে বরফের কারণে আটকা পড়া একদল পর্যটককে স্থানীয় মুসলিমরা উদ্ধার করে মসজিদে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পরদিন উদ্ধারকারী দলের আগমনের আগ পর্যন্ত তাঁদের জন্য খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন।

২৯ ও ৩০ জানুয়ারির রাত ও দিনে হাজারো অসহায় পুণ্যার্থীর জন্য খুল্লাবাদ সবজি মন্ডি মসজিদ, বড়া তাজিয়া ইমামবাড়া, হিম্মতগঞ্জ দরগাহ, চক মসজিদের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল। নখসখোলা অঞ্চলের হাফিজ রাজ্জাব মসজিদ ও চক এলাকার জামে মসজিদে অন্তত ৫০০ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়। মুসলিম-অধ্যুষিত রোশনবাগ, খুল্লাবাদ, রানি মান্ডি, শাহগঞ্জ এলাকার বহু গৃহস্থ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয় রাজস্থান, তামিলনাড়ু, বিহার, হরিয়ানা থেকে আসা পুণ্যার্থীদের।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাড়ির নারীরা সাধ্যমতো খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা করেছেন। কিছু এলাকায় সেই রাতেই ভান্ডারা বা লঙ্গরের আয়োজন করা হয়।

এছাড়া, স্থানীয় শিখ সম্প্রদায়ও তাঁদের গুরুদ্বারের দরজা খুলে দিয়েছিলেন, দিগ্‌ভ্রান্ত অসহায় মানুষদের আশ্রয় দিয়ে।

মাসুদ আহমেদ নামে এক শিক্ষক গণমাধ্যমে বলেন, “হিন্দুরা তাঁদের ধর্ম পালনে প্রয়াগে এসেছেন। বিপদে আমরা মানবধর্ম পালন করেছি, বাড়তি কিছু নয়।”

চক এলাকার বাসিন্দা মইনুদ্দিনের কথায়, “মানুষের বিপদে মানুষই তো এগোবে। এটাই ছোট থেকে আমরা শিখে এসেছি।”

খুল্লাবাদের মাহমুদ আজম বলেন, “মহাকুম্ভ শুরুর আগে প্রচার করা হয়েছিল, মেলাপ্রাঙ্গণের ধারেকাছে মুসলমানেরা যেন না যায়। কী আশ্চর্য, মেলা চলে এল মুসলিমদের মহল্লায়।”

এই ঘটনাগুলি প্রমাণ করে, সংকটের মুহূর্তে মানবতা কখনোই হারিয়ে যায় না; বরং, এটি আমাদের একত্রিত করে, আমাদের সংস্কৃতির গভীরতা ও সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102