অফিস আদেশ। কাগজে-কলমে এটি একটি সাধারণ বিষয়, কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে অনেক গভীর এবং জটিল কাহিনী। ৩ মার্চ থেকে মো. মজিবুর রহমানকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই আদেশে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনকে রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই আদেশের মধ্যে লুকিয়ে আছে আরও অনেক কিছু।
মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি বেতন-ভাতা পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যানবাহন সংক্রান্ত, টেলিফোন, মোবাইল ফোন এবং সংবাদপত্র সংক্রান্ত কোনো সুযোগ-সুবিধাও তিনি ভোগ করতে পারবেন না। এই আদেশ যেন তার কর্মজীবনে একটি বড় বাধার সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেছেন, “আমার বিবেকের জায়গা থেকে প্রশাসনিক হোক, আর্থিক হোক, এমন কোনো দুর্নীতি করিনি। এই অর্ডার দেখে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তদন্ত কমিটিকে আমি সহযোগিতা করব, যাতে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করতে পারে।” তার কথায় যেন মিশে আছে এক ধরনের হতাশা এবং আত্মবিশ্বাস। তিনি সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে চান, কিন্তু এই প্রক্রিয়া তাকে কতটা কষ্ট দিচ্ছে, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
অন্যদিকে, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “ছাত্র-শিক্ষক এবং প্রশাসনের সবার সঙ্গে সেতুবন্ধন করা আমার কাজ। এই পদের এমন কোনো ক্ষমতা নাই যে, আমি কিছু করে ফেলব। আমি চেষ্টা করব যেন আইনানুযায়ী সবার সঙ্গে ভালোভাবে চলতে পারি।” তার কথায় যেন এক ধরনের ভারসাম্য এবং দায়িত্ববোধের ছাপ রয়েছে। তিনি চান না যে, এই পদ তাকে কোনোভাবে ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন করে ফেলুক।
এই পুরো ঘটনাটি যেন একইসঙ্গে জটিল এবং রহস্যময়। একদিকে একজন ব্যক্তির কর্মজীবন এবং সম্মান ঝুঁকির মুখে, অন্যদিকে আরেকজন ব্যক্তি নতুন দায়িত্ব নিয়ে কীভাবে সামনে এগোবে, তা নিয়ে প্রশ্ন। এই ঘটনা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক এবং মানবিক গল্পও বটে।
এখন প্রশ্ন হলো, এই তদন্তের ফলাফল কী হবে? মো. মজিবুর রহমান কি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন, নাকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যি হবে? অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন কীভাবে তার নতুন দায়িত্ব সামলাবেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনও অজানা। তবে একথা নিশ্চিত, এই ঘটনা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই, এটি মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন এবং আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই গল্পের পরবর্তী অধ্যায় কী হবে, তা জানার জন্য সবাই উৎসুক। সময়ই বলে দেবে, এই জটিল এবং রহস্যময় কাহিনীর শেষ কোথায়।