বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদ্যাপন এবার একটি বিশেষ প্রতিপাদ্য নিয়ে আসছে: “নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান।” এই থিমকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে, যা উদযাপনকে আরও অর্থবহ ও সমৃদ্ধ করবে।
সোমবার, ২৪ মার্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এ সময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নববর্ষ উদ্যাপনের সার্বিক প্রস্তুতি ও অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়, যার আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।
এবারের শোভাযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখে, মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে, আরও বৃহত্তর ও বৈচিত্র্যময়ভাবে উদযাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। “নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শোভাযাত্রাটি প্রতি বছরের মতো এবারও চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে পহেলা বৈশাখের সকালে ৯টায় শুরু হবে। এটি শিশুপার্কের সামনে থেকে ঘুরে শাহবাগ হয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে, চারুকলা অনুষদের প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুভুজিলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। ৫টার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ, শুধুমাত্র বের হওয়া যাবে। নববর্ষের আগের দিন, ১৩ এপ্রিল রোববার সন্ধ্যা ৭টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।
এদিন ক্যাম্পাসে যানবাহন চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এবং মোটরসাইকেল চালানোও নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত ব্যক্তিরা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গেট ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন।
টিএসসির সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট ব্যবহার করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প টিএসসির সম্মুখে থাকবে। মোবাইল পাবলিক টয়লেট হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশপাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় স্থাপন করা হবে।
নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরিং করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।