বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে রবিবার অনুষ্ঠিত হলো যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) ১৫তম সভা। এই সভায় দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এই স্মারকে স্বাক্ষর করেন। অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন উচ্চতা সোমবার তথ্য অধিদফতর থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সভায় দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতাকে নতুন কৌশলগত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। বিশেষ করে শিল্প ও সরবরাহ খাতে সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। পূর্ব বৈঠকের ধারাবাহিকতা গত মার্চে চীন সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় জেইসির এই সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত করা হয়। চলমান প্রকল্প ও পাট শিল্পের উন্নয়ন সভায় চলমান প্রকল্পগুলোর ব্যবস্থাপনায় চীনের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। একইসঙ্গে চীনের সহায়তার শর্তাবলি আরও যৌক্তিক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পাট শিল্পের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি উভয়পক্ষই উন্নত, ন্যায্য এবং সুষম বাণিজ্য নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। তাদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এই নীতিমালা টেকসই উন্নয়নে সহায়ক হবে। ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে উভয়পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আগামী ১৬তম জেইসি সভা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই ধারাবাহিক আলোচনা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে দুই দেশের পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।