যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিআইএ বিশ্লেষক আসিফ রহমানকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সম্ভাব্য পাল্টা সামরিক হামলা বিষয়ক ‘টপ সিক্রেট’ নথি ফাঁস করার অভিযোগে তিন বছর এক মাসের (৩৭ মাস) কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মার্কিন বিচার বিভাগ বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ৩৪ বছর বয়সী আসিফ রহমান ২০১৬ সাল থেকে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-তে কাজ করছিলেন এবং তার কাছে ছিল ‘টপ সিক্রেট’ নিরাপত্তা ছাড়পত্র। গত নভেম্বর মাসে এফবিআই তাকে কম্বোডিয়ায় গ্রেফতার করে। জানুয়ারিতে ভার্জিনিয়ার একটি ফেডারেল আদালতে আসিফ রহমান জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের কাছে রাখার ও অন্যদের কাছে পাঠানোর দুই অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন। এসব অপরাধে তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারত। ঘটনার পেছনে রয়েছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা। হামাস ও হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যার জবাবে ইরান গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এর পর অক্টোবরের শেষদিকে ইসরায়েলও পাল্টা সামরিক হামলা চালায়। আদালতের নথি অনুসারে, ১৭ অক্টোবর আসিফ রহমান দু’টি ‘টপ সিক্রেট’ নথি প্রিন্ট করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্র দেশের সামরিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা সম্পর্কিত ছিল। তিনি সেগুলোর ছবি তুলে কম্পিউটারে সম্পাদনা করে উৎস গোপন রাখার চেষ্টা করেন এবং পরে সেগুলো এমন কিছু ব্যক্তিদের কাছে পাঠান যাদের সেগুলো দেখার অনুমতি ছিল না। সবশেষে, অফিসে কাগজগুলো কেটে ফেলেন। এই নথিগুলো পরে ‘মিডল ইস্ট স্পেকটেটর’ নামে টেলিগ্রামের একটি অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ইরানের ওপর সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার প্রস্তুতির তথ্য ছিল। তবে ইরানের কোথায় হামলা হবে সে বিষয়ে নথিতে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানায়, এসব নথি ন্যাশনাল জিওস্পাশিয়াল-ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (এনজিএ) তৈরি করেছিল, যেখানে ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটিতে বিমান চালনা অনুশীলন ও অস্ত্রসরবরাহ বিষয়ক তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই ফাঁসের কারণে ইসরায়েল তাদের পাল্টা হামলা কিছুটা দেরিতে চালায়।