ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি পুরো জাতির প্রতি আহ্বান জানাই, সবাই যেন নিজেদের ঐক্য বজায় রাখে এবং একই সঙ্গে নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখে। এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি একতার প্রয়োজন।” শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ ছাড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৩২০ জন। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানা হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী। রাজধানী তেহরানে, বিশেষ করে আইআরজিসি সদরদপ্তর, নাতান্জ পারমাণবিক স্থাপনা এবং আবাসিক ভবনগুলোতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনার পর ইরানজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তেহরানের রাস্তায় হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে “ইসরায়েল নিপাত যাক, আমেরিকা নিপাত যাক” স্লোগান দিয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইসরায়েলকে ভয়াবহ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাগচি হামলাকে “যুদ্ধের ঘোষণা” আখ্যা দিয়ে বলেন, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের জবাব অবশ্যই আসবে। আমাদের প্রতিরোধ হবে শক্তিশালী, যুক্তিপূর্ণ এবং কৌশলগত।” বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ৬২ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত আহমদ মোআদি বলেন, “আর কতদিন আমরা এই ভয়ে ভয়ে বাঁচব? এখনই সময় প্রতিশোধের। আমাদের গবেষক, প্রফেসরদের হত্যা করা হলো— এখন তারা আবার শান্তি আলোচনা চায়?” অন্যদিকে, ৫২ বছর বয়সী গাড়িচালক আব্বাস আহমাদি বলেন, “যদি এই নরপশুকে (নেতানিয়াহু) থামানো না হয়, আমাদের অবস্থা গাজার মতো হয়ে যাবে। ইরানের উচিত তাকে ধ্বংস করা।” এই হামলা ইরানের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে একটি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যা দেশটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।