ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার পর পারস্য উপসাগরজুড়ে পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই উত্তেজনার মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সামুদ্রিক পথ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সরবরাহে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে এবং বিশ্বের বড় তেলবাহী জাহাজগুলোর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
মার্কিন সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, দুটি বিশাল তেলবাহী জাহাজ— কোসইউসডম লেক ও সাউথ লয়্যালটি, যেগুলো প্রতি জাহাজে প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বহন করতে সক্ষম, হরমুজ প্রণালীতে প্রবেশ করলেও হঠাৎ দিক পরিবর্তন করেছে। স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে দেখা গেছে, এই জাহাজগুলো প্রণালী থেকে সরে গেছে, যা তেলের আন্তর্জাতিক পরিবহণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবর অনুসারে, দেশের পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যা ইরানকে যে কোনো সময় এই সমুদ্রপথে তেলবাহী জাহাজ চলাচলে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা দিচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামকে বাড়িয়ে দিতে পারে এবং এটি চীন, ভারত ও জাপানসহ বড় তেল আমদানিকারক দেশগুলোর জন্য একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে। চীন, যেটি হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে, এই বিষয়টি নিয়ে ইরানকে সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে বলে রুবিও আহ্বান জানান।
বিশ্বের প্রায় ২০% তেল সরবরাহ হরমুজ প্রণালী দিয়ে হয়ে থাকে, এবং এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ বন্ধ হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক তেল বাজারের ভারসাম্য হারাতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলবে।