জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেড় বছরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা। তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশ সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত একটি অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব। তিনি বলেন, রাখাইনে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও ‘আরাকান আর্মি’র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের মধ্যে চলমান সংঘাত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, যা রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন ও সহিংসতার ফলস্বরূপ। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী ও সময়াবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়া, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি রেজ্যুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। রেজ্যুলেশনে রোহিঙ্গাদের জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকতর দায়িত্ব গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম বলেন, রেজ্যুলেশনে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, রাখাইন রাজ্যের সব স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অংশগ্রহণ ও অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন কাঠামো স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশন ১৬ জুন শুরু হয়ে আগামী ৯ জুলাই শেষ হবে।