আরেকটি বছর শেষের পথে—২০২৪। খেলাধুলার জগতে নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী এ বছর কেমন ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য? ফিরে দেখা যাক বর্ষব্যাপী নানা ঘটনা।
ব্যালন ডি’অর: আনন্দ-বেদনার রাত্রি
২৮ অক্টোবর, প্যারিসের থিয়েটার দু শাতল। আলো ঝলমলে মঞ্চে ক্র্যাচে ভর করে উঠে এলেন ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি। হাতের ব্যালন ডি’অর ট্রফিটি যেন তাঁর বছরজুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার।
কিন্তু একই রাতে বিষাদের ছায়া ঘনিয়ে এল রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের জীবনে। ট্রফিটি উঠতে পারত তাঁর হাতেই—এমন প্রত্যাশা ছিল আগের রাত পর্যন্ত। ভাগ্যের এই নির্মমতা তাঁকে হতাশ করলেও ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কার কিছুটা সান্ত্বনা দিয়েছে। ফুটবল তো এমনই—আনন্দ আর বেদনার সহাবস্থান।
কোপা আমেরিকা ও ইউরো: উৎসব আর্জেন্টিনা ও স্পেনের
এ বছর দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসর কোপা আমেরিকা জিতে উল্লাসে মেতেছে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, ইউরোপের সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে স্পেন। দুই দেশের সমর্থকদের জন্য এ যেন দারুণ এক বছর।
তবে ব্রাজিলের জন্য বছরটি ছিল হতাশার। টানা দ্বিতীয় ফাইনালেও সাফল্যের দেখা পায়নি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড আবারও ইউরো জয়ের স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় বিদ্ধ হয়েছে।
গিনির মর্মান্তিক সংঘর্ষ
ফুটবলের আনন্দে বিষাদের ছায়া ফেলেছে গিনিতে। একটি ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ঝরে গেছে শতাধিক প্রাণ। এ ঘটনা শুধু ফুটবল নয়, মানবতার জন্যও এক বড় আঘাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যক্তিগত মাইলফলক ও বিদায়
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এই বছর গড়েছেন ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৯০০ গোলের রেকর্ড। এক হাজার গোলের মাইলফলকে পৌঁছাতে প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে, ২০২৪ সালে ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন জার্মানির টনি ক্রুস, আনহেল দি মারিয়া, টমাস মুলার ও ম্যানুয়েল নয়্যার। তাঁদের বিদায়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের একটি অধ্যায় যেন শেষ হয়ে গেল।
পেপ গার্দিওলার অমিল
ম্যানচেস্টার সিটির জন্য বছরটি যেমন আনন্দময়, পেপ গার্দিওলার জন্য তেমনটি ছিল না। সর্বশেষ ১২ ম্যাচের ৯টিতে হেরে লিগজয়ী এই কোচ ভাবছেন, “এ কী হলো!”
শেষ কথা
২০২৪ সাল আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য ছিল উত্থান-পতনের মিশেলে এক রোমাঞ্চকর বছর। আনন্দের পাশাপাশি বেদনা, সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য স্মরণীয় একটি বছর।