ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশ থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের প্রধান অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ওরফে শিব শঙ্কর হালদার। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তিনি কলকাতার আলিপুরের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান।

জামিনের প্রক্রিয়া

গত শুক্রবার কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি পি কে হালদারকে ১০ লাখ রুপির ব্যক্তিগত বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন। সোমবার আদালতে সেই বন্ড জমা পড়লে প্রেসিডেন্সি কারাগারে কাগজপত্র পৌঁছায়। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

জামিনের শর্ত

পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের জামিন দেওয়ার সময় আদালত বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেন।

• মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার নির্ধারিত তারিখে তাঁদের আদালতে হাজির থাকতে হবে।
• জামিনকালীন কোনো অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না।
• মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করা বা তাঁদের হুমকি, প্রলোভন কিংবা প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাবে না।
• পাসপোর্ট জমা দিতে হবে, যদি ইতোমধ্যে না দিয়ে থাকেন।
• তাঁদের যোগাযোগের ঠিকানা ও ফোন নম্বর আদালতকে জানাতে হবে।
• আদালতের অনুমতি ছাড়া ভারত ত্যাগ করা যাবে না।

জামিন দেওয়ার কারণ

আদালত উল্লেখ করেন, ভারতীয় আর্থিক কেলেঙ্কারি তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের বিশেষ আদালতের রায়ের স্বীকৃত অনুলিপি ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী সংগ্রহ করতে পারেননি। এ কারণে সিবিআই আদালতের বিচারপতি জামিনের সিদ্ধান্ত নেন।

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী পি কে হালদারকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।

বাংলাদেশে অর্থপাচার ও আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদার অনেক আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন। তবে তাঁর জামিন ও ভবিষ্যতে এই মামলার প্রক্রিয়া কীভাবে এগোবে, তা এখন দেখার বিষয়।