মানুষ সুস্থ থাকতে মাসিক আয়ের বড় একটি অংশ খরচ করে ফেলছে ডাক্তার, ওষুধ, জিম কিংবা নানা রকম স্বাস্থ্যসেবায়। অথচ একেবারেই বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন এক জাদুকরী উপায়, যা শরীর-মনকে রাখে প্রফুল্ল ও শক্তিশালী—সেটি হলো প্রাণখোলা হাসি। দরকার শুধু মনের জোর আর সামান্য সদিচ্ছা। সত্যিকারের হাসি শরীর ও মনে যে পরিবর্তন আনে, তা কোনো কৃত্রিম বা ভনিতাভরা হাসি পারে না। প্রাণখোলা হাসি যেন প্রকৃতির দেওয়া সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও কার্যকর চিকিৎসা। চাপ কমায় ও মুড ঠিক রাখে দৈনন্দিন জীবনে মানসিক চাপ এখন অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু প্রাণখোলা হাসি মুহূর্তেই সেই চাপকে হালকা করে দেয়। খারাপ মুড বা অস্বস্তির সময়ও একটুখানি হাসি মনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। বিশ্বাসযোগ্যতা ও আকর্ষণ বাড়ায় হাস্যোজ্জ্বল মানুষকে সবাই সহজেই বিশ্বাস করে। হাসি কথোপকথনকে করে আন্তরিক, মানুষকে করে আপন। শুধু তাই নয়, সুন্দর হাসি একজনকে করে তোলে অনেক বেশি আকর্ষণীয়, বিশেষ করে সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে। ব্যথা ও ক্লান্তি দূর করে গবেষণা বলছে, হাসি প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে এন্ডোরফিন নিঃসরণ বাড়ায়। ফলে ব্যথা কম লাগে, শরীরও সতেজ অনুভব করে। মনোযোগ ও অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধি করে চাপের কারণে মনোযোগে ঘাটতি দেখা দেয়। হাসিখুশি থাকা সেই মনোযোগ ফিরিয়ে আনে, পাশাপাশি মনের গভীরতা ও চিন্তাশক্তিকেও উজ্জ্বল করে। হার্ট ও শরীরের জন্য উপকারী হাসি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরকে শান্ত রাখে। নিয়মিত হাসি যেন হৃদপিণ্ডের জন্য এক প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। লাবণ্যতা ও যৌবন ধরে রাখে হাসি শুধু মনের নয়, চেহারারও ঔষধ। নিয়মিত হাসিখুশি মানুষ দেখতে তরুণ লাগে, বয়স যেন কয়েক বছর কমে যায়। ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে ও আয়ু বাড়ায় হাসি শরীরকে শিথিল করে ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। এমনকি গবেষণা বলছে, যারা প্রাণখোলা হাসিতে ভরিয়ে রাখে জীবন, তারা গড়ে সাত বছর বেশি বাঁচে। সংক্ষেপে বলা যায়, প্রাণখোলা হাসি এক অনন্য ওষুধ—যা বিনামূল্যে পাওয়া যায়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, অথচ দেয় দীর্ঘ জীবন, সুন্দর সম্পর্ক আর সুস্থ দেহ-মন।