চমৎকার বোলিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন মাহিশ থিকশানা ও আসিথা ফার্নান্দো। পরে বল হাতে আলো ছড়ালেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ব্যাটিং ধসে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রেকর্ডগড়া জুটিতে লড়ার মতো পুঁজি এনে দিলেন শেরফেইন রাদারফোর্ড ও গুডাকেশ মোটি। তাতে অবশ্য লাভ হলো না। চারিথ আসালাঙ্কার ফিফটি ও বাকিদের টুকটাক অবদানে অনায়াস জয় তুলে নিল শ্রীলঙ্কা।
পাল্লেকেলেতে বুধবার বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লঙ্কানদের জয় ৫ উইকেটে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করল তারা। প্রথম ওয়ানডেও ৫ উইকেটে জিতেছিল স্বাগতিকরা।
এর আগে তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
বৃষ্টির বাধায় ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্যারিবিয়ানদের ১৮৯ রানে গুটিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। প্রতিপক্ষের সেই রান তারা পেরিয়ে যায় ৩৪ বল বাকি থাকতে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০ উইকেট ভাগ করে নেন শ্রীলঙ্কার তিন বোলার। সর্বোচ্চ চার শিকার ধরেন লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা। তিনটি করে প্রাপ্তি থিকশানা ও আসিথার।
৫৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানেন রাদারফোর্ড ও মোটি। নবম উইকেটে ১১৫ বলে ১১৯ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন তারা।
ওয়ানডেতে নবম উইকেটে এই প্রথম শতরানের জুটি দেখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০২২ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইয়ানিক কারিয়াহ ও আলজারি জোসেফের ৮৫ রানের জুটি ছিল আগের সেরা। সব দল মিলিয়ে, এই সংস্করণে নবম উইকেটে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি।
মেঘলা আকাশের নিচে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে চেপে ধরে শ্রীলঙ্কা। নিয়মিত বিরতিতে তুলে নিতে থাকে উইকেট। তৃতীয় ওভারে আলিক আথানেজকে বোল্ড করে শুরুটা করেন রহস্য স্পিনার থিকশানা।
পরপর দুই ওভারে উইকেট নেন আসিথা। এই পেসারের বাউন্সারে ফিরতি ক্যাচ দেন ব্র্যান্ডন কিং। চমৎকার এক ডেলিভারিতে স্টাম্প হারান শেই হোপ। রোস্টন চেইস, রোমারিও শেফার্ড ও আলজারি জোসেফকে টিকতে দেননি হাসারাঙ্গা।
একশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া দলের সেখান থেকে হাল ধরেন রাদারফোর্ড ও মোটি। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে নিজের মতো খেলে ৫৭ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে ফিফটি করেন রাদারফোর্ড। আরেক প্রান্তে মোটিও দেখান তার ব্যাটিং সামর্থ্য। ৬১ বলে ফিফটি করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডে তো বটেই, লিস্ট ‘এ’ তেই প্রথমবার পঞ্চাশের স্বাদ পেলেন মোটি।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। ২৫ রানে আভিশকা ফার্নান্দো ও কুসাল মেন্ডিসকে হারায় তারা। তবে দলকে পথ হারাতে দেননি নিশান মাদুশাঙ্কা ও সাদিরা সামারাউইক্রামা। তাদের ৬৫ বলে ৬২ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি।
এর পরই আবার জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। চার ওভারের মধ্যে বিদায় নেন দুই থিতু ব্যাটসম্যান মাদুশাঙ্কা ও সামারাউইক্রামা। দুইজনেই করেন ৬ চারে ৩৮। চারিথ আসালাঙ্কা ও জানিথ লিয়ানাগের ৫৫ জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় তারা।
লিয়ানাগে কাজ শেষ করে ফিরতে পারেননি। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে ফিফটি করা লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কা দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন। তিনি অপরাজিত থাকেন ১ ছক্কা ও ৭ চারে ৬২ রান করে।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে একই মাঠে আগামী শনিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৫ ওভারে ১৮৯ (কিং ১৬, আথানেজ ১, কার্টি ৬, হোপ ৫, রাদারফোর্ড ৮০, চেইস ৮, শেফার্ড ৪, ওয়ালশ ১, জোসেফ ১, মোটি ৫০*, সিলস ৫; থিকশানা ৯-১-২৫-৩, আসিথা ৭-০-৩৫-৩, ওয়েল্লালাগে ৬-০-৩৬-০, হাসারাঙ্গা ৮-০-৪০-৪, আসালাঙ্কা ৪-০-২৬-০, কামিন্দু ২-০-১৯-০)
শ্রীলঙ্কা: ৩৮.২ ওভারে ১৯০/৫ (মাদুশাঙ্কা ৩৮, আভিশকা ৯, মেন্ডিস ৩, সামারাউইক্রামা ৩৮, আসালাঙ্কা ৬২*, লিয়ানাগে ২৪, কামিন্দু ১১*; মোটি ৯-২-১৮-১, জোসেফ ৬-০-৩০-২, সিলস ৩-০-২০-০, ওয়ালশ ৫-০-৪১-০, শেফার্ড ৪-০-২৩-০, চেইস ৮.২-০-৪৩-১, আথানেজ ৩-০-১২-০)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহিশ থিকশানা
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে লঙ্কানরা