সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫১ অপরাহ্ন

ফেরত আনা পাচারকৃত অর্থ

bornomalanews
  • Update Time : বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৫ Time View

বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের সময় পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সহায়তা চেয়েছেন।

এছাড়া বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থসম্পদ সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন দেশে চিঠি দেওয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী সাবেক বেশ কজন মন্ত্রী, সংসদ-সদস্য এবং তাদের স্ত্রী, সন্তান ও সহযোগীদের নামে থাকা অর্থসম্পদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। বেশকটি বড় ব্যবসায়িক গ্রুপের নামে বিদেশে থাকা অর্থসম্পদের তথ্যও চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া রাজনৈতিক নেতা, ব্যাংকার, আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের গ্রুপের নামও আছে অর্থসম্পদের তথ্য চাওয়ার তালিকায়। বস্তুত বেশ কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ব্যাংক খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশ থেকে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। আমরা সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

গত ১৫ বছরে প্রভাবশালীরা দেশের আর্থিকসহ প্রায় সব খাতেই নজিরবিহীন লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। দুঃখজনক হলো, এ কাজে বিগত সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, সংসদ-সদস্য, আমলা ও ব্যবসায়ীরা ছিলেন সামনের সারিতে। ধারণা করা হচ্ছে, পতনের পর সরকারের মন্ত্রী, সংসদ-সদস্য ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের একটি অংশ দেশত্যাগ করেছে। ওইসব ব্যক্তি এবং তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করা অর্থের বড় অংশই যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউএই, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ আরও কিছু দেশে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে সহায়তা চেয়েছেন। তারা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সহায়তা করতে চান।

জানা যায়, বিএফআইইউ নানা তথ্য সংগ্রহ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকে সরবরাহ করবে। তারা নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী তদন্ত করবে। ইতোমধ্যে সংস্থাগুলো গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে কাজ শুরু করেছে। বিএফআইইউসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা প্রাথমিক তদন্তে আলোচ্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর নামে দেশে-বিদেশে বিপুল অঙ্কের অর্থসম্পদের সন্ধান মিলেছে। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত। এসব অর্থের একটি অংশ তারা বিদেশে পাচারও করেছেন।

বিএফআইইউ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে বিভিন্ন দেশে থাকা অর্থসম্পদের তথ্য চেয়েছে মানিলন্ডারিং নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা এগমন্ট গ্রুপের কাছে। বাংলাদেশ এগমন্ট গ্রুপের সদস্য। বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচার হচ্ছে, সেসব দেশও এ গ্রুপের সদস্য। বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহে বিএফআইইউর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে বিদেশে অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ ও পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা কমিয়ে আনার পদক্ষেপও নিতে হবে। যেহেতু পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে সাফল্য কম, সেহেতু এ ব্যাপারে জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102