রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আজ মারাত্মকভাবে অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি দিনদুপুরেও বিভিন্ন যানবাহনে অভিনব কায়দায় ছিনতাই হচ্ছে। ছিনতাইকারীরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। গত রোববার রাতেই রাজধানীর বনশ্রী ও মোহাম্মদপুরে ফিল্মি স্টাইলে তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
বনশ্রীর ঘটনায় দেখা গেছে, একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী তার প্রতিষ্ঠান থেকে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন। বাসার কাছাকাছি এলে ছিনতাইকারীরা তিনটি মোটরসাইকেলে এসে তাকে ঘিরে ধরে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে তার সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে প্রথমে বনশ্রীর ফরাজী হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার শরীরে চারটি গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া শরীরের অন্তত ছয় স্থানে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে।
মোহাম্মদপুরে পৃথক স্থানে রিকশা থামিয়ে এক দম্পতি ও দুই যুবককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উল্লেখ্য, ওই দুটি ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভিডিও দুটি ভাইরালও হয়েছে।
### অলিগলির ভয়াবহতা
আমরা দেখছি, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো তো বটেই, অলিগলিতেও হরদম ছিনতাই হচ্ছে। এসব অপকর্ম করছে মূলত জেলফেরত আসামিসহ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অলিগলির ছিনতাইকারীদের এলাকার অনেকেই চেনে, তারা এলাকারই বাসিন্দা। তারপরও তাদের বাধা দেওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য তৎপরতা না থাকার কারণে ছিনতাইকারীদের দমানো যাচ্ছে না। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় যদিও বা কোথাও কোথাও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব কমে; কিন্তু সুযোগ পেলেই তারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। অবস্থা এখন এমন যে, নগরবাসী রাস্তায় বেরোলেই সর্বক্ষণ ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন—কখন তারা ছিনতাইয়ের শিকার হন।
### দেশব্যাপী অপরাধের ছোবল
শুধু ঢাকায়ই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানির ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। অপরাধীরা শুধু সম্পদই লুট করছে না, আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভুক্তভোগীকে আহতও করছে। আহতের পাশাপাশি তাই ঘটছে নিহতের ঘটনাও। জানমালের নিরাপত্তা এভাবে হুমকিতে পড়া স্বভাবতই গ্রহণযোগ্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার উপরই যে এর দায় বর্তায়, তা বলাই বাহুল্য। জনগণের করের টাকায় বেতনভুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে, এটাই প্রত্যাশিত। পরিতাপের বিষয়, এর বিপরীত চিত্রই দেখতে পাচ্ছি আমরা। সেক্ষেত্রে