শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন

ভুয়া ভিডিও মার্কিন নির্বাচন ঘিরে, এফবিআইয়ের সতর্কতা

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৫ Time View

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে হঠাৎ করেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া দুটি ভুয়া ভিডিও সম্পর্কে সতর্ক করেছে দেশটির ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। সংস্থাটি বলছে, ওই ভিডিওগুলোর লক্ষ্য হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ তৈরি করা। সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা এর আগেও এ বিষয়ে অনেকবার সতর্ক করেছেন।

বিবিসি ভেরিফাই প্রমাণ পেয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন শত শত ভুয়া ভিডিও তৈরি হয়েছে, যার উৎস রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এলেই রাশিয়ার হস্তক্ষেপ কিংবা এ ধরণের অভিযোগ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। বিশেষ করে ২০১৬ সালের এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে এ ধরনের তথ্য বেশি আলোচনায় এসেছে।

এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখেও রুশ তৎপরতার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে।

শনিবার সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এফবিআই বলেছে, দুটি ভিডিওতে ব্যালট প্রতারণা এবং ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসের স্বামী ডাগ এমহফকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ভুয়া ওই দুটি ভিডিও দেখে মনে হবে এগুলো এফবিআই বানিয়েছে। ভিডিওর সঙ্গে সংস্থাটির লোগো জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এটি এক্স এ বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি বা খুব বেশী মানুষ এটা দেখেনি।

এফবিআইয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব ভিডিও সঠিক নয়, এফবিআই এগুলো করেনি এবং এগুলোতে মিথ্যা বলা হয়েছে। এফবিআইয়ের কার্যক্রম নিয়ে ভুয়া কনটেন্ট তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে হেয় করার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবিশ্বাস তৈরি করা।

এফবিআই যেভাবে ভিডিওগুলোর কনটেন্টের বর্ণনা দিয়েছে, তার সাথে এর আগে বছরের শুরুতে বিবিসি ভেরিফাই যে ৩০০শর মতো ভিডিও পেয়েছিলো তার মিল আছে।

একটি অনলাইন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তখন এসব ভিডিও পাওয়া গিয়েছিল। ভিডিওতে বিশ্বাসযোগ্য করে গ্রাফিক্স উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া টেক্সটগুলো দেখে মনে হবে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বিবিসি, ফ্রান্স ২৪ ও ফক্স নিউজসহ অন্তত ৫০টি সংবাদমাধ্যম থেকে নেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই অনলাইনে ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এটা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে জোর দিয়ে।

এতে কমলা হ্যারিস সম্পর্কে মিথ্যা দাবি ও বিশৃঙ্খলা এবং ‘গৃহযুদ্ধ’ সম্পর্কে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ফিনল্যান্ডভিত্তিক অনলাইন অ্যানালিটিকাল কোম্পানি চেকফার্স্ট ওই ভিডিওগুলোর নেটওয়ার্ক সম্পর্কে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করেছে।

তারা দেখেছে যে, এর পেছনে আছে একটি রুশ মার্কেটিং এজেন্সি ও একটি রুশ আইপি এড্রেস। চেকফার্স্টের প্রধান নির্বাহী গুইলাউমে কুস্টার বলেন, আমরা এর সঙ্গে রাশিয়ার যোগসূত্র করতে পারি এবং কিছু বিষয় থেকে আমরা জানতে পারি যে, এগুলো তৈরি করেছে রুশ একটি কোম্পানি। প্রমাণের আরেকটি সূত্র হলো ডেটা সেট। সেখানে প্রবেশ করে আমরা প্রমাণ পাই যে, যেখান থেকে ইমেইল পাঠানো হয়েছে সেটাও রাশিয়ায়।

এর সাথে যে ভিডিও তৈরি করা হয়েছে সেগুলো ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে রুশ ভাষার টেলিগ্রাম চ্যানেলে।
চেকফার্স্ট যে স্টাইল, বার্তা ও থিম ভিডিওর সাথে পেয়েছে সেটি ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন আরেকটি কার্যক্রমের সাথে মেলে বলে বিবিসি ভেরিফাই জানতে পেরেছে।

তবে এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে, কারা ওই কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এটি রাশিয়ার সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত কি না।

ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, নির্বাচনে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ তার দেশের বিরুদ্ধে এসেছে সেটি ‘ভিত্তিহীন’। রাশিয়ার কৌশলের দিকে যত ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে তা একটি অপবাদ, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির লড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য তৈরি।

এক্সে ওই ভিডিও ক্লিপ দেখা হয়েছে কয়েক লাখ বার। তবে যারা পোস্ট করেছে, তাদের অনুসারী কম এবং অল্প মানুষই তাতে কমেন্ট করেছে। কিছু ‘বট’ অ্যাকাউন্ট থেকেও এটা দেখা হচ্ছে বলে বোঝা গেছে।

এফবিআই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এর বাইরেও তারা সাম্প্রতিক রাশিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংস্থা এফবিআই, অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স এবং দ্য সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি একটি ভাইরাল সম্পর্কে তথ্য জানিয়েছে। ওই ভিডিওতে মন্তব্য করা হয়েছিল যে, এতে হাইতি থেকে আসা একজন ভোট দিয়েছে। ওই সংস্থাগুলো বলছে এই তথ্য মিথ্যা এবং এটি ‘রাশিয়া প্রভাবিত লোকজন’ তৈরি করেছে।গত সপ্তাহে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে, একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে যে নির্বাচনী কর্মী মেইলে আসা ব্যালট ধ্বংস করছে যেগুলোতে পেনসিলভানিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া হয়েছে বলে বোঝানো হয়েছে। সংস্থাগুলো বলছে এগুলো রাশিয়ানদের তৈরি এবং এগুলো মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102