ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করলেও, এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নেপাল বা ভুটানে বাংলাদেশি পণ্য রফতানির ওপর পড়বে না, এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। বুধবার, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার, ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) একটি সার্কুলার জারি করে জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন থেকে ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন, বন্দর এবং বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, “ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এই সুবিধার কারণে আমাদের বিমানবন্দর এবং বন্দরগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছিল। লজিস্টিক বিলম্ব এবং উচ্চ ব্যয় আমাদের নিজস্ব রফতানিকে বাধাগ্রস্ত করছিল। তাই ৮ এপ্রিল থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এই পদক্ষেপগুলো ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল বা ভুটানে বাংলাদেশের রফতানির ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।” এর আগে, সিবিআইসির সার্কুলার সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনে ইন্ডিয়া টুডে উল্লেখ করে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশে রফতানির ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিবিআইসির এই সিদ্ধান্তের ফলে টেক্সটাইল, ফুটওয়্যার, জেমস ও জুয়েলারি খাতে ভারতীয় রফতানির সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে পোশাক খাতে বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। এই কারণে, সেদেশের রফতানিকারকরা বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, “ভারতের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিওটিও) আওতায় নয়াদিল্লির প্রতিশ্রুতির বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। ডব্লিওটিও’র বিধান অনুসারে, সদস্য দেশগুলোকে পরস্পরকে স্থলবেষ্টিত দেশে পণ্য আমদানি-রফতানির সুযোগ দিতে হয়।” সূত্র: দ্য স্টেটসম্যান, দ্য প্রিন্ট