মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে প্রকম্পিত ঢাকা!

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৮ Time View

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি যেন ঢাকাকে পরিণত করেছে এক অস্থির ফিলিস্তিনের মঞ্চে। গতকাল সকাল থেকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষের ঢল ঢাকার দিকে ছুটে এসেছে। ‘তুমি কে, আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজপথ। লাখ লাখ মানুষের মিছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং তার আশপাশের এলাকা পরিণত করেছে জনসমুদ্রে। হাতে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা, মাথায় কেফিয়াহ, অনেকের হাতে প্রতীকী রক্তাক্ত মৃত শিশুর লাশ—এ যেন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেখা গেছে, বিনামূল্যে পানি ও লেবুর শরবত বিতরণ করতে। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র সংগঠনের সদস্য, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সচেতন নাগরিকরা—সবাই একত্রিত হয়েছেন। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড—‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’, ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’। তপ্ত রোদে হাঁটতে হাঁটতে হ্যান্ডমাইক কিংবা খালি গলায় তারা উচ্চারণ করছিলেন ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির স্লোগান। ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’—এমন স্লোগান যেন আকাশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশের সড়কগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মিরপুর থেকে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, বাংলামোটর ও শাহবাগ—সব জায়গায় ছিল মানুষের স্রোত। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে সায়েন্সল্যাব, টিএসসি থেকে নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিকেল—সবখানে ছিল এক বিশাল জনসমাগম। মানুষের চাপের কারণে কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল যান চলাচল। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা নির্বিঘ্নে রাজপথে মিছিল করেছেন। অনেকে বলছিলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এত মানুষের উপস্থিতি তারা আগে কখনো দেখেননি। মঞ্চে দেশের খ্যাতনামা আলেম-ওলামা ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে গোটা বিশ্বে বিক্ষোভের ঢেউ উঠেছে। বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে এই ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূলমঞ্চে বিকাল ৩টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি, যা করেন বিখ্যাত কারি আহমদ বিন ইউসুফ। বক্তব্যে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা ও মতের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিন সেখানকার মানুষের অধিকার। গাজার মানুষের ওপর জুলুম বন্ধের দাবিতে আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’ ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘জনতার এই মহাসমুদ্র ফিলিস্তিন ও আল আকসার প্রতি আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা তাদের থেকে দূরে থাকলেও আজকের এই বিপুল উপস্থিতি প্রমাণ করে সবার হৃদয়ে বাস করে একটি করে ফিলিস্তিন।’ তিনি স্লোগান দেন, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘আমার ভাই শহীদ কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর-জেনোসাইড নো মোর’। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় বিকাল ৪টায় মোনাজাত পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102