বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের পক্ষ থেকে বিএনপির প্রতি সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর এক নতুন জরিপে। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ৩৮.৭৬ শতাংশ তরুণ ভোটার বিএনপিকে ভোট দেওয়ার আশা করছেন, যা তাদের কাছে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এর পরের অবস্থানে ২১.৪৫ শতাংশ ভোট নিয়ে জামায়াতে ইসলামি রয়েছে। জরিপের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল, অন্যান্য ধর্মীয় দলগুলো ৪.৫৯ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা। এই জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের মতে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫.৮৪ শতাংশ ভোট, এবং জাতীয় পার্টি (জাপা) পাবে ৩.৭৭ শতাংশ ভোট। অন্যান্য দলগুলোকে মোট ০.৫৭ শতাংশ ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন জরিপে অংশ নেওয়া ভোটাররা। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগের প্রতি ভোটারদের সমর্থন কম বলে মনে হচ্ছে। যদিও জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ১৫.০২ শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবুও দলটির প্রতি তরুণদের মনোভাব কিছুটা মিশ্রিত। এই জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার তরুণ ভোটার ছিলেন। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল এসএসসি বা এর নিচে, এবং ৬০ শতাংশের ছিল এসএসসি বা তার উপরে। জরিপটি দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। জরিপের ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রতি সবচেয়ে বেশি সমর্থন ছিল, প্রায় ৪০ শতাংশ, যেখানে জামায়াতকে ২২.২১ শতাংশ এবং এনসিপিকে ১৪.৪৪ শতাংশ ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। একইভাবে, নারীদের মধ্যে বিএনপির প্রতি সমর্থন ছিল ৩৭.০৩ শতাংশ, জামায়াতকে ২০.৫৭ শতাংশ এবং এনসিপিকে ১৭.৪৭ শতাংশ ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রামীণ এবং শহুরে অঞ্চলে সমর্থনের পার্থক্যও দেখা গেছে। গ্রামাঞ্চলে বিএনপির প্রতি সমর্থন ৩৭.৭২ শতাংশ এবং শহুরে অঞ্চলে ৩৯.৭৭ শতাংশ। জামায়াতের প্রতি গ্রামে ২১.২৫ শতাংশ এবং শহরে ২১.৬৬ শতাংশ সমর্থন রয়েছে। এনসিপির ক্ষেত্রে, গ্রামে ১৫.৩৮ শতাংশ এবং শহরে ১৬.২৮ শতাংশ সমর্থন আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগে সমর্থন গ্রামীণ অঞ্চলে ১৬.৬২ শতাংশ এবং শহর অঞ্চলে ১৩.৪৬ শতাংশ ভোটার জানিয়েছে, যা শহুরে এলাকায় তুলনামূলক কম। এই ফলাফল রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে নানা ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে তরুণদের সমর্থন কার দিকে যাবে তা নিয়ে। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের তরুণ ভোটাররা পরবর্তী নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে এবং তাদের মতামত ও সমর্থন দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে।