টাকা পাচার বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ পাস দেশ থেকে অর্থ পাচার রোধ এবং ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, ব্যাংকের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং তদন্ত প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এই অধ্যাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনার ক্ষেত্রে আইনগত অস্পষ্টতা ছিল। নতুন অধ্যাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা এবং হস্তক্ষেপের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে সাধারণ আমানতকারীদের বিপদে পড়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। বিচার প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়নের উদ্যোগ সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দেওয়ানী মামলার আইন ‘দ্য কোড অব সিভিল প্রসিডিউর – ১৯০৮’ (সিপিসি)-এ বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। মামলার শুনানি প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে সমন জারি টেলিফোন, এসএমএস এবং আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে করা যাবে। এছাড়া মিথ্যা মামলার শাস্তি ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে সেকেলে রয়ে গেছে। এই সংশোধনীগুলো বিচার ব্যবস্থাকে আধুনিক ও কার্যকর করতে সহায়তা করবে। আন্তর্জাতিক জলবণ্টন চুক্তিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুটি আইনের একটিতে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এই পদক্ষেপগুলোকে দেশের অর্থনৈতিক ও বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।