দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক বৈঠকে এই নির্দেশনাগুলো প্রদান করা হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে মানুষের হারানো আস্থা পুনরুদ্ধার করা একান্ত জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, গত কয়েক দশক ধরে লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অকল্পনীয়। শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে এই লুটপাটে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, শেয়ারবাজার যেন আর লুটেরাদের আড্ডাখানায় পরিণত না হয় এবং সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ যেন নিরাপদ থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রফেসর ড. ইউনূস আরও বলেন, শেয়ারবাজারের সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সংস্কারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে এমন অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে, যাতে মানুষ বিনিয়োগে আগ্রহী হয় এবং তাদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। বৈঠকে তিনি সরকারের মালিকানাধীন এবং বেসরকারি খাতের বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও কারসাজি রোধে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর জোর দেন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে জড়িত অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি উল্লেখ করেন, ব্যাংক নির্ভরতা কমিয়ে বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহে আরও উৎসাহিত করতে হবে। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য একমত পোষণ করেন এবং দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এই বৈঠক দেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া দিকনির্দেশনা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।