মালয়েশিয়ায় হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিল এক প্রবাসী বাংলাদেশির লাশ। আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ না পাওয়ায় এবং অর্থের অভাবে এভাবে বেওয়ারিশ পড়ে ছিল ১৮ দিন। অবশেষে প্রবাসীদের চাঁদায় সে লাশ দেশে আসছে।
তার নাম সুলতান আহমদ (৪৭)। বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের লম্বাখালীপাড়ায়। পিতা ফিরোজ আহমদ ও মাতা মরতুজা বেগম।
মালয়েশিয়ায় চট্টগ্রাম সমিতির আহ্বায়ক ফজলে নূর বাপ্পি এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “মারা যাওয়ার ১৮ দিন পর বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সকাল ১১টায় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ ১০২ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা সুলতানের লাশ।”
সুলতান পেশায় ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক, থাকতেন দেশটির জোহর রাজ্যের রাজধানী জোহর বাহরুতে। গত ২৫ অগাস্ট অসুস্থতা নিয়ে স্থানীয় সুলতানা আমিনাহ হাসপাতালে ভর্তি হলে তিনি সেখানেই মারা যান।
কিন্তু তার কোন আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ না পাওয়ায় হাসপাতালের হিমঘরে লাশ পাঠায় কর্তৃপক্ষ। এভাবে বেওয়ারিশ কেটে যায় ১৮ দিন।
চট্টগ্রাম সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন বলেন, “তাকে আমরা কেউ আগে থেকে চিনতাম না। ফরিদুল আলম নামে আমাদের এক সদস্যের মাধ্যমে আমরা এ বাংলাদেশির লাশের খবর জানতে পারি এবং পুরো পরিচয় খুঁজে বের করি। জানতে পারি, সুলতানের লাশ দেশে পাঠাতে লাগবে প্রায় ৭ হাজার রিঙ্গিত।
“কিন্তু এখানে তার কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। লাশ দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেবেন এমন কেউ নেই, টাকাও নেই। পরে আমরা সমিতির সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানানোর পর সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। সেই টাকা আমরা জোহর বাহরু গিয়ে মালয়েশিয়ান লাশ পাঠানোর এজেন্টের কাছে দিয়ে আসি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ। টাকা পাওয়ার পর তারা লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।”
সুলতানের বাংলাদেশে থাকা স্ত্রী জোলেখা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “সুলতান প্রায় ৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় ছিলেন। মারা যাওয়ার ১ মাস ২৫ দিন আগে দেশ থেকে ঘুরে গেছেন। তিনি সুস্থই ছিলেন। হঠাৎ জ্বরে ভুগছিলেন কিছুদিন। জ্বর ভালো হয়ে গিয়েছিল। ২৫ অগাস্ট সকালেও তিনি সুস্থ ছিলেন, তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে আমার। পরে বিকেলে শুনেছি তিনি মারা গেছেন।”
সুলতান আহমদের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। বড় ছেলের বয়স ১৬ বছর বলে জানান স্ত্রী জোলেখা বেগম।