বিএনপির পক্ষ থেকে অব্যাহত দাবির মুখে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণায় সরকারের গড়িমসির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। বিএনপি মনে করছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ ক্ষমতায় থাকার জন্য নানা অজুহাতে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর চেষ্টা করছে। এটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য হুমকি হতে পারে, এবং দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম এমন একটি পরিস্থিতিতে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি চাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতারা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখের দাবিতে রাজপথে নামার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে, তারা নিশ্চিত করেছেন যে আন্দোলনের আয়োজনের সময় যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী দুই মাস দলের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে এবং এই সময়ের মধ্যে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে মাঠে নামানো হবে। চট্টগ্রাম এবং খুলনায় অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশের সফলতার পর, দলটি বগুড়া এবং ঢাকায় আরও সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে, যেখানে বড় ধরনের জনসমাগম হবে। বিএনপির নেতারা মনে করেন যে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব, এবং এই কারণে তারা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে চান। তারা বলছেন, সরকার যদি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা না নেয়, তবে তা গণতন্ত্রের জন্য বিপদজনক হতে পারে, এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি এই মুহূর্তে সরকারকে বিব্রত করতে চাইছে না, তবে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সরকারের কোনো গড়িমসি বা অবহেলা হলে বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনের তারিখের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করতে পারে। দলের আরেক শীর্ষ নেতা দাবি করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও নির্বাচনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। ড. ইউনূস নিজেও জানিয়েছেন যে, তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে। তবে, সরকারের ভেতর থেকে কিছু বাধা রয়েছে, যা যদি বিএনপি সঠিকভাবে চাপ তৈরি করতে পারে, তবে তা কেটে যাবে। বিএনপি নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, সরকার দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশ আরো উন্নত ও স্থিতিশীল হতে পারে, এবং তারা দলীয়ভাবে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে রয়েছেন।