শারজাহর মাঠে এক রাতের নাটকীয়তা, যা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য এক গভীর হতাশার মুহূর্তে পরিণত হয়েছে। ২০৫ রানের পাহাড় সমান সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে সেখান থেকে ম্যাচ হারাটা যে কতটা হতাশাজনক, তা কেবল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা অনুভব করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এই হারটি আমিরাতের মতো সহযোগী সদস্য দলের কাছে, যারা আগে কখনো এমন সংগ্রহ তাড়া করে জয় পায়নি। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আমিরাতের ক্রিকেট ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক অর্জন। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে যে সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল, তা ছিল আক্রমণাত্মক। তবে সেই সংগ্রহও শেষ পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখতে পারল না বাংলাদেশ। ম্যাচের শেষ বলে দুই উইকেটের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এটি ছিল তাদের প্রথম জয়, যখন তারা একটি টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে এত বড় রান তাড়া করে জয় লাভ করল। হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস বেশ কিছু কষ্টকর অনুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি শিশিরের প্রভাবকে দায়ী করে বলেন, “আমরা ব্যাট হাতে ভাল শুরু করেছিলাম, উইকেটও ছিল ভালো। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে শিশির আমাদের বোলারদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। তবে ছেলেরা চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের ছোট মাঠে শিশিরের প্রভাব কতটা হতে পারে, সেটা আগে থেকেই মাথায় রাখতে হবে। বল করার সময় একটু বেশিই হিসাব-নিকাশ করতে হবে।” এ ম্যাচে বাংলাদেশের পেসার নাহিদ রানের অভিষেক হলেও, তিনি নিজের প্রথম ম্যাচে ভালো করতে পারেননি। ৪ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ৫০ রান দিয়েছেন, যা দলের জন্য হতাশাজনক ছিল। লিটন তার উপর আরও ভালো কিছু আশা করেছিলেন, তবে তিনি মনে করেন যে, প্রতিটি ক্রিকেটারেরই ভালো ও মন্দ সময় থাকে। এদিকে, আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমের নেতৃত্বে দুর্দান্ত একটি ম্যাচে জয়ী হয়ে মাঠ ছাড়েন তার দল। ওয়াসিম নিজে ৪২ বলে ৮২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন এবং উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ জুহাইবের সঙ্গে মিলে ১০৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দেন। আমিরাতের জয়ে আত্মবিশ্বাসী ওয়াসিম বলেন, “আমার বলার মতো ভাষা নেই। বাংলাদেশকে হারাতে পারাটা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা জানতাম, এই কন্ডিশনে রান তাড়া করা সম্ভব, আর সেই বিশ্বাস থেকেই খেলেছি।” এ হারটি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতির জন্য একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে। শিশির, ছোট মাঠ, চাপ—এগুলো নতুন কিছু নয়, তবে এমন একটি ম্যাচে যেখানে বাংলাদেশ ২০৫ রান করে, তাতে এই হারটি কেবল হতাশার নয়, বরং এটি একটি অ্যালার্ম বেল বাজানোর মতো।