পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে দুটি চয়েস দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে বলেছিল, “চারদিকে জনগণের উত্তাল সমুদ্র আসছে, তাদের দ্বারা পিষ্ট হতে চান নাকি জান বাঁচানোর জন্য পালিয়ে যাবেন?”
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমি পালাই না, ভয় পাই না বলা সেই শেখ হাসিনা জীবন বাঁচানোর জন্য নেতা-কর্মীসহ সবাইকে বিপদে ফেলে পালিয়ে গিয়েছেন। এটাই হচ্ছে ফ্যাসিবাদের পরিণতি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “পালিয়ে গিয়ে হাসিনা ভারত থেকে ষড়যন্ত্র করছেন এবং মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি দাবি করছেন, দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে বসবাস করে। এই অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়।”
ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার
জনসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তিনি বলেন, “আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। শেখ হাসিনা নির্বাচনের নামে ক্ষমতায় এসে গুম, খুন এবং নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। এটি একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের আচরণ।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী সরকারের ষড়যন্ত্র চলছে, তারা দেশকে বিভক্ত করতে চায়। তাদের সকল অপচেষ্টা প্রতিহত করতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে।”
জনসভায় অংশগ্রহণ
সনাতন ধর্মাবলম্বী ও উপজাতিসহ সর্বস্তরের মানুষ এই জনসভায় যোগ দেন। বোদা-দেবীগঞ্জ উপজেলা ও পঞ্চগড় পৌর শাখা বিএনপির আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমিরসহ জেলা ও আঞ্চলিক নেতারা।
এই সমাবেশে বিভিন্ন জেলার বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।