জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিবাদ কর্মসূচি, এক নারী শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দেয়ার ঘটনায় এবং রাবি (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষার্থীদের হেনস্থার প্রতিবাদে ছিল।
কর্মসূচির শুরু হয় কাঁঠালতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে, যা পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দুই ঘন্টা অবস্থান নেয়। এই সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মূলক স্লোগান দেন। অবস্থান কর্মসূচির শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিবিরের নেতারা ধারাবাহিকভাবে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে, বিশেষ করে যারা শিবিরের বিপরীতে অবস্থান নেন বা মত প্রকাশ করেন, তাদেরকে অবমাননাকর মন্তব্য, হুমকি ও হয়রানিমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
নেতাকর্মীরা আরও বলেন, “যখন একজন নারী শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে রিট করেন, তখন তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছে, যা একটি ভয়ঙ্কর নজির।” তারা বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং এটি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের নিরাপদ অংশগ্রহণের ওপর সরাসরি আঘাত।
এ সময় জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমরা এক একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এমন একটি বাংলাদেশে কোনো গণহত্যাকারী বা গণধর্ষকের স্থান নেই।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমরা গত ১৭ বছর ধরে নিজেদের ব্যানারে রাজনৈতিক মিছিল করেছি, যার ফলে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা, মামলা, গুম এবং খুনের শিকার হয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তিন নেতাকে গুম করা হয়েছে, তারা এখনও নিখোঁজ। এত অত্যাচারের পরেও আমরা অন্য কোনো আশ্রয় গ্রহণ করিনি।”
তিনি আরও বলেন, “শিবিরের অনেকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে, ব্যানারে এমনকি পোস্টেড নেতা ছিলেন। এছাড়াও, জুলাই-২৪ এর পর অনেক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং তাদের অপকর্ম এবং অন্যায়কে প্রশয় দিয়েছেন। যারা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে দাবি তুলেছিলেন, তারাও এখন শিবিরের সভাপতি-সেক্রেটারি।”
এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদল, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি হুমকি ও হয়রানির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ জানাল।