বলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম শীর্ষ নায়িকা মালা সিনহা আবারও আলোচনায়। তবে এ বার চলচ্চিত্র নয়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং তাঁর জীবনের এক বিতর্কিত অধ্যায়। ১৯৭৩ সালের বিমান ছিনতাই কাণ্ড ও ১৯৭৮ সালে ব্যক্তিগত জীবনের এক ঘটনার কারণে ফের ঘুরে দেখা হচ্ছে তাঁর নাম। ক্যারিয়ারের বিতর্কিত অধ্যায় মালা সিনহার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছিল সফলতায় ভরপুর। কিন্তু ১৯৭৮ সালে এক ঘটনায় তাঁর ইমেজে বড় আঘাত আসে। জানা যায়, তাঁর বাথরুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১২ লাখ টাকা। উৎসের হিসাব দিতে না পারায় আদালতে দাঁড়াতে হয় তাঁকে। তখন আদালতে তিনি স্বীকার করেন, “সব টাকা দেহব্যবসা করে কামিয়েছি।” পরে জানা যায়, এটি ছিল তাঁর বাবা ও আইনজীবীর সাজানো পরামর্শ। শেষ পর্যন্ত তাঁকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিয়ে রেহাই পেতে হয়। নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার ও নতুন প্রেক্ষাপট সম্প্রতি নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এখান থেকেই আবার আলোচনায় আসেন মালা সিনহা। কারণ, বহু বছর আগে সুশীলার স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদি সেই বিমানের ছিনতাইয়ে যুক্ত ছিলেন, যে বিমানে যাত্রী হিসেবে ছিলেন মালা সিনহা ও তাঁর স্বামী নেপালি অভিনেতা সি পি লোহানি। ১৯৭৩ সালের বিমান ছিনতাই ১৯৭৩ সালের ১০ জুন বিরাটনগর থেকে কাঠমাণ্ডু যাওয়ার পথে রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইনসের ১৯ আসনের একটি টুইন অটার বিমান ছিনতাই হয়। এতে ককপিট দখল করেন নেপালি কংগ্রেসের তিন তরুণ কর্মী — দুর্গা প্রসাদ সুবেদি, নাগেন্দ্র ধুঙ্গেল ও বসন্ত ভট্টরাই। ছিনতাইয়ের নেপথ্যে ছিলেন পরবর্তীতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হওয়া গিরিজা প্রসাদ কৈরালা। ঘটনাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল অর্থ সংগ্রহ; বিমান থেকে নগদ ৩০ লাখ রুপি নিয়ে ট্রাকে করে দার্জিলিংয়ে পাঠানো হয়। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার সময় বিমানে যাত্রী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালা সিনহা ও তাঁর স্বামী। পরবর্তীতে এই অতীতের টানাপোড়েন আজকের নেপালের রাজনৈতিক আলোচনাকে আরও জটিল করেছে। নেপালের রাজনৈতিক সংকটের মাঝে তাই আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে বলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেত্রীর নাম, যাঁর জীবনকাহিনি নিজেই যেন চলচ্চিত্রের মতো রোমাঞ্চকর ও বিতর্কে ঘেরা।