শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চে মিলিত হলেন বিশ্বের তিন প্রভাবশালী নেতা—ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঐতিহাসিক সাক্ষাতে আলোচনা হলো বিশ্ব বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্কনীতি এবং চলমান ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে। সম্মেলনটি বিশ্বে উদীয়মান শক্তিগুলোর মাঝে কৌশলগত ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।
কিন্তু এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ। এক তীব্র বার্তায় তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ‘শুল্ক অপব্যবহার’ এবং ‘একতরফা বাণিজ্যিক সম্পর্ক’-এর অভিযোগ তোলেন।
ট্রাম্পের ভাষায়, “ভারত আমাদের দেশের সঙ্গে বিপুল পরিমাণে ব্যবসা করে, প্রচুর পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু আমরা তাদের বাজারে প্রায় ঢুকতেই পারি না। এটি একপাক্ষিক সম্পর্ক।” তিনি আরও জানান, ভারত শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দিলেও সেটা অনেক দেরিতে এসেছে। “বহু বছর আগেই এটা করা উচিত ছিল,” বলেই যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও দেন।
ট্রাম্প বিশেষভাবে ভারতের রাশিয়ার প্রতি ঝোঁক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারত তাদের অধিকাংশ জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়া থেকেই সংগ্রহ করে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নয়। এমন অবস্থান আমেরিকান স্বার্থের পরিপন্থী বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই হুমকি ও মন্তব্য ভারত-মার্কিন সম্পর্কের মাঝে নতুন করে উত্তেজনার সূচনা করতে পারে। বিশেষ করে যখন ভারতের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য চীন ও রাশিয়ার দিকে কিছুটা হেলে পড়ছে, তখন ওয়াশিংটনের এমন প্রতিক্রিয়া পারস্পরিক আস্থায় চিড় ধরাতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে এসসিও শীর্ষ সম্মেলন কেবল অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা নয়, বরং বিশ্বশক্তিগুলোর মধ্যে নতুন কৌশলগত হিসাব-নিকাশের এক মঞ্চ হিসেবে নিজেদের প্রভাবও স্পষ্ট করে তুলেছে।