ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইসরায়েলের নাগরিক এবং ইহুদি। গত মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ৭৩ বছর বয়সী মতি মামান নামের ওই ব্যক্তি দুইবার গোপনে ইরানে যান। তিনি সেখানকার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। ইরানি গোয়েন্দারা পরিকল্পনা প্রস্তুত করে তাকে প্রশিক্ষণ দেন এবং হত্যার দায়িত্ব দিয়ে ইসরায়েলে পাঠান। এ কাজের জন্য তাকে টাকাও পরিশোধ করে তেহরান।
মতি মামানের মূল টার্গেট ছিল নেতানিয়াহুকে হত্যা করা। এ ছাড়া তেহরানের চাহিদা মতো প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে হত্যার লক্ষ্য ছিল।শিন বেত ও পুলিশের তদন্ত অনুসারে, মামান একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তুরস্কে দীর্ঘকাল বসবাস করেছেন। সেখানে তুর্কি ও ইরানি নাগরিকদের সাথে তার ব্যবসায়িক এবং সামাজিক সম্পর্ক ছিল। এ সূত্র থেকেই ইরানি গোয়েন্দারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।কিন্তু ইসরায়েলি গোয়েন্দারা আগে থেকে বিষয়টি জেনে যাওয়ায় অভিযুক্তের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। গ্রেপ্তার করা হয় মামানকে। বর্তমানে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলার পর ওইদিন থেকেই সেখানে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনো চলছে। হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছিল। এর পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল যোদ্ধারা, তাদের মধ্যে এখনো ১০১ জন জিম্মি হামাসের কবজায় রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ হাজার।
এ হত্যাযজ্ঞের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে মোটাদাগে অভিযোগ করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনপন্থি অনেকেই নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার বা হত্যা করতে মরিয়া। এ ছাড়া তেহরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার পর প্রতিশোধের নেশায় মরিয়া ইরান। এরই ধারাবাহিকতায় ইরান গুপ্তঘাতক ভাড়া করতে পারে। তবে অনেকে বলছেন, লেবাননের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মুহূর্তে এ ধরনের অভিযোগের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কোনো দেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইরানকে অভিযুক্ত করা গেলে আন্তর্জাতিক চাপে পড়বে তেহরান।