মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে নিজ ভূখণ্ডে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক গেমিং বা জুয়া খেলার লাইসেন্স দিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমির শাসিত রাজ্য আবুধাবি। মার্কিন লস এঞ্জেলেস ভিত্তিক ক্যাসিনো অপারেটর ‘উইন রিসোর্টস’ আরব দেশটির আবুধাবি রাজ্যে জুয়া খেলা চালুর লাইসেন্স পেয়েছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হোটেল এবং ক্যাসিনো কোম্পানি উইন রিসোর্টকে আবুধাবি এ লাইসেন্স প্রদান করেছে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। তাছাড়া উইন রিসোর্টস তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়মিত লটারি এবং কমার্শিয়াল গেমিং হয়। এসব সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য গত বছর একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা করেছে আরব দেশটি যার নাম ‘জেনারেল কমার্শিয়াল গেমিং রেগুলেটরি অথরিটি’। এ অথরিটিই প্রথমবারের মতো লাইসেন্স জারি করল।
এছাড়াও ক্যাসিনো অপারেটররা দীর্ঘদিন ধরে আমিরাতে একটি রিসোর্ট নির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছিল। এটি এখন বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।
বাণিজ্যিক ক্যাসিনো খোলার লাইসেন্স পাওয়া উইন রিসোর্টের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের প্রধান শহর লাস ভেগাসে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খামিয়া এমিরেত (রাজ্য) আল মারজান দ্বীপে একটি বিলাসবহুল রিসোর্ট নির্মাণ করছে এ প্রতিষ্ঠান। সে রিসোর্টে ক্যাসিনো খোলার জন্য আমিরাতের সরকারের কাছে আবেদন করেছিল কোম্পানিটি। সে আবেদন মঞ্জুর করে শনিবার উইন রিসোর্টকে লাইসেন্স প্রদান করল আমিরাতের সরকার।
উল্লেখ্য, উইন রিসোর্ট এবং আল মারজান দ্বীপ ও রাস আল খামিয়ার যৌথ বিনিয়োগে নির্মাণ হচ্ছে এ রিসোর্টটি। গত আগস্টে এক বিবৃতিতে উইন রিসোর্ট জানিয়েছিল, প্রকল্পটির জন্য এ পর্যন্ত ৫১ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। ১ হাজার ৫৪২ কক্ষবিশিষ্ট বিলাসবহুল এ রিসোর্টটি উদ্বোধন করা হবে ২০২৭ সালে।
ইসলাম ধর্মে জুয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতেও জুয়া খেলা নিষিদ্ধ। তবে উইন রিসোর্ট আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছিল যে, ইউরোপ-এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব পর্যটক আসেন, শুধু তাদেরই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে রিসোর্টের ক্যাসিনোতে। মূলত এ শর্তের ওপর ভিত্তি করেই লাইসেন্স প্রদান করেছে আবুধাবি।
এদিকে গত মাসে আমিরাতে ক্যাসিনো খোলার জন্য আবেদন করেছে অপর মার্কিন কোম্পানি এমজেএম। সে আবেদনও দেশটির সরকার মঞ্জুর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরব দেশটির সরকার তাদের পর্যটন খাতকে শক্তিশালী করতে ২০২২ সালে এক মহাপরিকল্পনা নেয়। এ পরিকল্পনার আওতায় পর্যটন খাতে ২০২২ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ৭২০ কোটি ডলার বিনিয়োগের এবং এ সময়সীমার মধ্যে ৪ কোটি পর্যটককে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র : ব্লুমবার্গ, আরটি