বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে কটূক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কটূক্তিকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ী বরখাস্ত না করা হলে ‘উত্তরবঙ্গ ব্লকেড’র হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুর আড়াইটায় রংপুর নগরীর পার্কের মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ আবু সাঈদ ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শহিদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলীও উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য রাখেন, আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন, বেরোবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান সুমন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বৈরাচারীর দোসররা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকে মেনে নিতে পারেনি। তারা এ দেশ নিয়ে নানারকম ষড়যন্ত্র করছে। গণঅভ্যুত্থান ও শহিদদের নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি শহিদ আবু সাঈদ ও গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে প্রমাণ করেছেন, তিনি স্বৈরাচারের দোসর। তাকে শুধু বদলি করলেই হবে না, স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে।
তারা আরও বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে স্থায়ী বরখাস্ত না করা হলে উত্তরবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শহিদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, অনলাইনে জানতে পারি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যে আওয়ামী লীগের দোসর, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী বলেছেন। সুশীল সমাজকে মায়াকান্না করতে বলেছেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে এত সাহস পান? আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি, এই কর্মকর্তাকে স্থায়ীভাবে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হোক এবং তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক।
এর আগে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করেন এবং গণঅভ্যুত্থান নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন। এরপর তাকে বদলি করা হয়।
শহিদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয়কর্মী ও বেরোবির সমন্বয়ক ছিলেন। ১৬ জুলাই আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন আবু সাঈদ। যিনি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের প্রথম শহিদ হন।