বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

আরো গণমুখী হতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে : তারেক রহমান

bornomalanews
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৩ Time View
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের মাফিয়া ও দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উদ্যোগই সফল হবে না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো গণমুখী হতে হবে। সরকার অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থ হলে প্রত্যাশিত গণতন্ত্রে উত্তরণ হোঁচট খেতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগীরা ঘরে-বাইরে, প্রশাসনে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে চায়। ষড়যন্ত্রের বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে না পারলে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের অর্জন বিপন্ন হবে। রাষ্ট্রকে জনগণের প্রত্যাশিত কাজ করতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় পাশে যুক্ত ছিলেন তার স্ত্রী এবং জেডআরএফ’র ওভারসিজ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ডা. জুবাইদা রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
শুরুতে অধ্যাপক ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারের কুরআন তিলাওয়াতের পর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী। অনুষ্ঠানে গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১০ জন শহীদের পরিবার এবং ১০ জন আহতকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। শহীদদের পরিচয় তুলে ধরেন ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ডা. পারভেজ রেজা কাকন এবং ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম। আহতদের পরিচয় তুলে ধরেন ডা. সাজিদ ইমতিয়াজ উদ্দিন।
রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, পররাষ্ট্রনীতি এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক এম. শাহীদুজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম রাশেদ আহমেদসহ শহীদ ও আহত পরিবারের কয়েকজন।
এসময় বিএনপি ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সাইফুল আলম নীরব, গোলাম সারওয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, ড. মো: আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. আব্দুস সালাম, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. শাহাদত হোসেন, ডা. মো. আনোয়ারুল হক, অধ্যাপক এস এম আব্দুল আওয়াল সোহাগ, ড. আব্দুল করিম, ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম, সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, আতিকুর রহমান রুমন, প্রকৌশলী মাহবুব আলম ও প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুলসহ অনেক ডাক্তার, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও সাংবাদিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জেডআরএফ নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম, ডা. এ কে এম মাসুদ আখতার জীতু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেডআরএফ সভাপতি তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের বসিয়ে রেখে কোনো উপকার মিলবে না। মাফিয়াচক্র বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তবে মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। মাফিয়াচক্রের কবল থেকে বঞ্চিতরা অধিকার চায়। শহীদদের রক্তের দাগ এখনো শেষ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। সরকারের কিছু সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বর্তমানে দেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্বিসহ অবস্থা। নিত্যপণ্যের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাস্তব ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।’ মাফিয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে গণমুখী হতে হবে। সংস্কার ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। যেকোনো সংস্কারে জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে তা ভালো ফলাফল দেয় না।’
তিনি বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের অনেক নেতাকর্মী ভিন্নমতের অনেকের সম্পত্তি দখল করেছিল। জবরদখলকারীদের কাছ থেকে সেসব উদ্ধারে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
তারেক রহমান নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বলেন, ‘বর্তমানে দেশে কৃষক-শ্রমিক-দিনমজুর এবং স্বল্প আয়ের মানুষ দুর্বিসহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যে দিশেহারা। জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও মানুষের আয় সেভাবে বাড়েনি। সরকারকে বলবো- জিনিসপত্রের দাম কমাতে পদক্ষেপ নিন। সিন্ডিকেট ভেঙে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনুন।’
তিনি রাষ্ট্রের সংস্কার নিয়ে বলেন, ‘সংস্কার অনেক প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সেটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। কখনো সময়সাপেক্ষ। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। জনগণের সাথে সংস্কার কাজ করলে সেটি সহজ হয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102