রাস্তা পারাপারের সময় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাসের চাপায় মাইশা ফৌজিয়া মিম নামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বাসটি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়াও রাত ১০টা থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। এতে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা-বরগুনা ও ভোলা রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নিহত ছাত্রী হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিম।
বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে চাপা দেয় একটি বাস। এতে গুরুতর আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বাসটি আটকে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম ও মেহরাব হোসেন জানান, কুয়াকাটা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে বেপরোয়া গতিতে আসতেছিলো নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের একটি বাস। এ সময় হাত উঁচিয়ে সড়ক পার হচ্ছিলো শিক্ষার্থী। কিন্তু বেপরোয়া গতির বাসটি তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে কীর্তনখোলা নদীর উপর দপদপিয়া সেতুর টোল ঘর এলাকায় গিয়ে বাসটি আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আনার পর বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনাস্থলে থাকা বন্দর থানার এসআই আব্দুল জলিল রাত ১১ টার দিকে জানান, শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। এতে বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজিব জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দোষীকে গ্রেফতার না করা হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল জানান, দোষীদের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।
বরিশাল মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ বলেন, দোষীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। শিগগির তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন বলেন, আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার চাই। আগামি ১২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর অবস্থান থেকে যা যা করা দরকার আমরা তাই করতে বাধ্য হবো।