রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমেন আজ থেকে ৮ বছর আগে ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তখন তিনি স্নাতকের ছাত্র হিসেবে ওই হলে আবাসিকতা পেয়েছিলেন। এবার এমফিল এর ছাত্র হিসেবে তিনি সেই হলের ২৩৯ নম্বর কক্ষের আসন বরাদ্দ পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বরাদ্দকৃত কক্ষে উঠেন। তিনি জানান, সর্বশেষ ২০১৬ সালে নির্যাতন করে শিবির নেতাকর্মীদের এই হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল’। হলে এসে তিনি এই হলে অবস্থানরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ও পরামর্শ নেন।
এর আগে ‘একটি অধ্যায়ের পুনর্জাগরণ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ফিরে আসা’ শিরোনামে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ৮ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঘটে যাওয়া নির্মম নির্যাতনের স্মৃতিগুলো আজও আমার মনে তাজা।
সেদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তাণ্ডব, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে সেক্রেটারি ফয়সাল আহমেদ রুনুর ২২৯ নম্বর কক্ষে ঘটে যাওয়া নির্মমতার স্মৃতিগুলো আজও আমার মনে অমলিন। সেই ভয়াবহ রাত সেই নির্যাতনের রক্তাক্ত অধ্যায় আজও আমাকে তাড়া করে।
নতুন অধ্যায় রচনার সুযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ দীর্ঘ সময় পর সেই একই হলে নতুন পরিচয়ে ফিরছি । এই নতুন স্বাধীনতার আলোয় বঙ্গবন্ধু হলে আবার ফিরে আসতে পেরে আমি আবেগে আপ্লুত। এমফিল শিক্ষার্থী হিসেবে এই হলে আমার জন্য বরাদ্দ হওয়া রুমটি আমার কাছে শুধু থাকার জায়গা নয়, বরং এটি অতীতের দুঃখকে জয় করার এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন এক অধ্যায় রচনা করার সুযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু থাকার জায়গা নয়, বরং এটি জ্ঞানচর্চা, অ্যাকাডেমিক উন্নয়ন, এবং পারস্পরিক বন্ধুত্বের একটি নিরাপদ ক্ষেত্র। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মননশীলতাকে বিকশিত করার জন্য এগুলো হওয়া উচিত সহিংসতামুক্ত ও শান্তির আশ্রয়।
তবে আজ আমি শুধু আমার নিজের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো যেন আর কখনো সহিংস রাজনীতি বা অন্যায় অত্যাচারের শিকার না হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো হবে জ্ঞানচর্চা ও বন্ধুত্বের নিরাপদ স্থান, ত্রাস ও বিভেদের নয়।’