তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মাঝে। রবিবার (৯ নভেম্বর) থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ এ তথ্য জানান। এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়ার পর বিকেলে শিক্ষকরা শাহবাগ এলাকায় গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বহু শিক্ষক আহত হন এবং পাঁচজন শিক্ষককে আটক করে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। শিক্ষক নেতা শামছুদ্দীন মাসুদের ভাষ্যমতে, শতাধিক শিক্ষক সাউন্ড গ্রেনেডের ক্লিংকার ও বুলেটে আহত হয়েছেন। সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি। শিক্ষকদের দাবি আদায়ে চলমান কর্মসূচি আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানিয়েছেন, শিক্ষকরা যমুনা অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশি ভাষ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কয়েকজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকেও এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আন্দোলনকারীরা কলম সমর্পণের নামে শাহবাগে জড়ো হন এবং বিকেল ৪টার দিকে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশি বাধার মুখে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বলে দাবি করা হয়, এতে পুলিশেরও বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। ডিএমপি জানায়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সংলগ্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু আন্দোলনকারীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এগোতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং রাষ্ট্রীয় স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ডিএমপি সবাইকে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। তবে শিক্ষকরা তাদের দাবির প্রতি অটল থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে, পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।