নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য এবং নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের তৎপরতার প্রেক্ষাপটে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগী দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় শুরু করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মতবিনিময় নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং যুগপৎ আন্দোলনের ঐক্য ধরে রাখার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
শনিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রথম দফায় ১২–দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে পৃথক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটির নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতারা জানিয়েছেন, মূলত নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, সরকারের সহযোগিতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ এবং এর প্রভাব নিয়ে মতামত দেন অংশগ্রহণকারীরা।
বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ এবং ধৈর্যের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন,
“দেশ নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত থেমে নেই। রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি না করে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে এবং সংঘাত এড়িয়ে কৌশলী হতে হবে।”
১২–দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বৈঠক শেষে বলেন,
“আমাদের আন্দোলনের ঐক্য এখনো গুরুত্বপূর্ণ। শিগগিরই বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম মন্তব্য করেন,
“এই বৈঠকের মাধ্যমে বিএনপি আমাদের মনোভাব জানার চেষ্টা করেছে। এটি বোঝায় যে আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।”
বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর মনোভাব যাচাই এবং তাদের ঐক্য নিশ্চিত করাই এই মতবিনিময়ের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বার্তা দেওয়া যে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে চায়।
বিএনপি জানিয়েছে, শিগগিরই অন্যান্য সমমনা দলগুলোর সঙ্গেও মতবিনিময় হবে। পাশাপাশি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
সব মিলিয়ে, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির এই মতবিনিময় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। যুগপৎ আন্দোলনের ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করাই তাদের মূল কৌশল বলে ধারণা করা হচ্ছে।